পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩১৫
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
৩১৫

কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞান ৩১৫ এমন সব উত্তর জানতে চাওয়ার সার্থকতা কী আমার ঠিক মাথায় ঢুকল না। পরামনােবিজ্ঞানীরা বলেছেন, জ্ঞানতিলক সমুদ্র দেখেনি, অথচ সমুদ্রের জলের রঙের সঠিক বর্ণনা দিয়েছে। সমুদ্রের পাড়ে যে নারকেল গাছ তাও বলতে পেরেছে। সমুদ্রকূলে বালির বর্ণনাও সঠিক দিয়েছে। এই সবই বলতে পেরেছে পূর্বজন্মের তিলকরত্নের সমুদ্র দেখার স্মৃতি উদ্ধার করে। সমুদ্র না দেখলে কী সমুদ্রের বর্ণনা দেওয়া যায় না। নিউ ইয়র্ক না দেখলেও কী নিউ ইয়র্কের বিরাট উঁচু উঁচু বাড়ির বর্ণনা করা অসম্ভব? রবীন্দ্রনাথকে মুখােমুখি দেখলেও কী তার চেহারা আমাদের অপরিচিত? | একটা চার-পাঁচ বছরের বাচ্চাকে হাতি, বাঘ, ভালুক, ঘােড়া, নদী, সমুদ্র, পাহাড়, ট্রেন—এইসব নানা ধরনের জিনিসের ছবি দেখিয়ে দেখবেন আপনার বয়স্ক চোখের চেয়েও ওদের চোখ অনেক বেশি ডিটেলস-এর দিকে নজর রাখে। (ছােটদের ছবি আঁকতে তার পছন্দমতাে রঙের মাঝখানে বসিয়ে দিন, দেখবেন, অনেক সময় ওদের ডিটেলসের কাজ আপনাকে অবাক করে দেবে। একটা ছােট-শিশুকে নদী, পাহাড়, সমুদ্রের রঙচঙে ছবি দেখাবার পর তাকে জিজ্ঞেস করে দেখবেন, সে প্রত্যেকটারই সঠিক বর্ণনা দিয়ে দেবে। জ্ঞানতিলক কোনও দিনই কোনও সমুদ্রের রঙিন ছবি দেখেনি, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জ্ঞানতিলককে যে অনেক কিছু আগে থেকেই শেখানাে হয়েছিল এই ধরনের অনুমান করার মতাে অনেক ধারণা আছে। | পরামনােবিজ্ঞানীদ্বয়ের সেরা জাতিস্মর জ্ঞানতিলক কিন্তু তার জাতিস্মর ক্ষমতা সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। জাতিস্মর তদন্ত ৩ : ফ্রান্সিস পুনর্জন্ম ১৯৭৭-এর এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার কিছু খবরের কাগজে একটি জাতিস্মরের খবর প্রকাশিত হয়ে যথেষ্ট আলােড়ন সৃষ্টি করে। খবরে বলা হয়-মা তারা কাছেরীর মৃত কেরানি ফ্রান্সিস কোদিতুয়াকু তিন বছর আগে জন্ম নিয়েছে কান্দাগােদার এক পরিবারে। ফ্রান্সিস মারা যান ১৯৭৩-এর ১৬ এপ্রিল ৫২ বছর বয়সে। | কিছু পরামনােবিজ্ঞানী, গবেষক ও বৌদ্ধ সন্ন্যাসী শিশুটিকে পরীক্ষা করে জানান—ও সত্যিই জাতিস্মর। ফ্রান্সিসের জীবনের খুঁটিনাটি অনেক ঘটনা ও বর্ণনা করেছে, সেই সঙ্গে চিনিয়েও দিয়েছে পূর্বজন্মের স্ত্রী ও দুই ছেলেকে। শ্রীলঙ্কার র্যাশান্যালিষ্ট অ্যাসােসিয়েশন শিশুটির জাতিস্মর ক্ষমতা পরীক্ষা করতে এগিয়ে এল। ফ্রান্সিসের বাড়ির সঙ্গে শিশুটি আগেই পরিচিত ছিল। বেশ কয়েকবার ওই বাড়িতে গিয়েছে। ফ্রান্সিসের স্ত্রী ও দুই ছেলেকেও ভালােমতাে চেনে। অতএব র্যাশান্যালিস্ট অ্যাসােসিয়েশনের সদস্যরা একটু অন্যরকমভাবে