পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩২৪
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
৩২৪

৩২৪ অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) নিউ ইয়র্কের ধনকুবের আইন-ব্যবসায়ী লুথার মার্শ তার ম্যাডিসন অ্যাভিনিউ-এর সমস্ত সম্পত্তি তার কন্যার বিদেহী আত্মার অনুরােধে শ্রীমতী ডিস-ডেবারকে দানপত্রের দলিল করে অর্পণ করলেন। ওমনি মার্শের নিকট আত্মীয়রা ডিস-ডেবারের বিরুদ্ধে মার্শকে প্রতারণার অভিযোেগ আনলেন আদালতে। | ডিস-ডেবার এতে সামান্যতম বিচলিত তাে হলেনই না, বরং, এই ঘটনাটিকে প্রচারের বিরাট সুযােগ হিসেবে গ্রহণ করলেন। স্থানীয় সমস্ত পত্রিকা এমন অসাধারণ মিডিয়ামের বিরুদ্ধে আনা অভিযােগ নিয়ে নানা খবরে পাতা ভরাতে লাগল, সাংবাদিকদের কাছে ডিস-ডেবার ঘােষণা করলেন, তিনি এই মামলায় উকিল ছাড়াও দশজন বিখ্যাত আইনজ্ঞ ও রাজনীতিবিশারদের আত্মার পরামর্শ নিচ্ছেন। ডিস-ডেবার ঘােষণা করলেন তিনি আজ পর্যন্ত আত্মাদের এনে যতগুলাে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তার প্রতিটিই ঘটিয়েছেন নিজের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতায়। আদালতে আরও অনেক ঘটনাই জানা গেল। জানা গেল শ্রীমতী ডিস-ডেবারের প্রথম জীবনে নাম ছিল এড়িথা শলেমন। জন্মেছিলেন উনিশ শতকের মাঝামাঝি মার্কিন দেশের কেনটাকি প্রদেশে। বাবা ছিলেন বেপরােয়া ও ছন্নছাড়া। জীবনযাপনের তাগিদে অনেককে নির্বিবাদে ঠকিয়েছেন। | কুড়ি বছর বয়েসে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কার্লিমাের শহরে এড়িথা নিজেকে হাজির করলেন এক লাস্যময়ী রমণী হিসেবে। প্রচার করলেন, তিনি হলেন ব্যাভেরিয়ার রাজা প্রথম লুই-এর অবৈধ কন্যা। মা ছিলেন বহুবল্লভা নর্তকী লােলা। অমনি হৈ-হৈ পড়ে গেল, স্থানীয় পত্রিকাগুলােতে এডিথার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হলাে ফলাও করে। এডিথা বিয়ে করলেন তরুণ যুবক ডাঃ মেসান্টকে। বছর ঘুরল না, এডিথা বিধবা হলেন। সেই সময় আমেরিকা ও ইউরােপ জুড়ে সম্মােহন বিদ্যার বেশ রমরমা। এডিথা সম্মােহন বিদ্যা শিখে তার সঙ্গে জুড়ে দিলেন একটু লাস্য ও একটু কূটবুদ্ধি। পসার জমে উঠতে দেরি হলাে না। এমনি সময় অভিজাত বংশের শ্রীডিস-ডেবারের সঙ্গে আলাপ হলাে। ডিস-ডেবারকে বিয়ে করে নিজেকেও অভিজাত মহিলা করে তুললেন এডিথা। হলেন শ্রীমতী ডিস-ডেবার। | এমনি সম্মােহন করতে করতেই একদিন সম্মােহনের আসরে শ্রীমতী ডিস-ডেবারের শরীরে বিদেহী আত্মার আবির্ভাব ঘটল। সেদিনের আসরে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের সেরা ধনী আইনব্যবসায়ী লুথার মার্শ। বিদেহী আত্মা হিসেবে সেদিন হাজির হয়েছিলেন মার্শেরই মৃত পত্নী। কণ্ঠস্বর না মিললেও, বাচনভঙ্গি যথেষ্ট মিলে গেল, সেইসঙ্গে মিলে গেল কথা বলার সময়কার কয়েকটি মুদ্রাদোষ। শ্রীমতী ডিস-ডেবারের মিডিয়াম’-খ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল অভিজাত মহলে। নিত্য বসতে লাগল প্ল্যানচেটের আসর। মােটা অর্থের বিনিময়ে প্রিয়জনদের বিদেহী