পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩২৫
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
৩২৫

প্ল্যানচেট (Planchette) বা প্রেত বৈঠক ৩২৫ আত্মার সঙ্গে যােগাযােগ ঘটিয়ে দিতে লাগলেন শ্রীমতী ডিস-ডেবার। একসময় শ্রীমতী ডিস-ডেবারের আমন্ত্রণে বিখ্যাত শিল্পীদের আত্মারাও হাজির হতে লাগলেন। বিশাল অর্থের বিনিময়ে অতীত দিনের শিল্পীদের বিদেহী আত্মা কয়েক দিনের মধ্যেই এঁকে দিতে লাগলেন ছবি। আরও যে-সব বিখ্যাত বিদেহী আত্মরা প্ল্যানচেট-চক্রে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা তাে আগেই বলেছি। গণ্ডগােল পাকাল মার্শের মৃত মেয়ের আত্মা এসে বাবাকে তার ম্যাডিসন অ্যাভেনিউ-এর সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিতে বলায়। মেয়ে কীভাবে বলেছিলেন? শ্রীমতি ডেবার একটা সাদা কাগজ চার ভাঁজ করে ধরতেই শােনা গেল খসখস লেখার আওয়াজ। তারপর কাগজের ভাঁজ খুলতেই দেখা গেল বাবাকে সম্পত্তি দানের আর্জি করেছেন মেয়ে। মার্শও দানপত্র করে দিলেন আদালতেও শ্রীমতী ডিস-ডেবারের নামে প্রতারণার অভিযােগ এলাে। অভিযােগ যারা আনলেন, তাঁরা বলতে চাইলেন, শ্রীমতী ডিস-ডেবারের গােটা প্ল্যানচেটের ব্যাপারটার মধ্যেই রয়েছে একটা ফাকি। আর, এই ফঁাকি প্রমাণ করতে আদালতে হাজির করা হলাে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত জাদুকর কার্ল হার্টজকে (Carl Hertz)। | আদালতে একদিকে অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী মিডিয়াম ডিস-ডেবার অন্য দিকে বিখ্যাত জাদুকর কার্ল হার্টজ, সে এক অভাবনীয় ব্যাপার। বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক ও দর্শকদের ভিড়ে ঠাসা আদালত কক্ষে কার্ল এক টুকরাে সাদা কাগজ নিয়ে দেখালেন সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা শ্রীমতী ডিস-ডেবার এবং মাননীয় জুরিদের। কাগজটি এবার ডিস-ডেবারের হাতে দিয়ে বললেন ওটা চার ভাঁজ করতে। ডিস-ডেবার আর একবার কাগজটি পরীক্ষা করে চার ভাঁজ করলেন। জাদুকর কার্ল এবার কাগজটি নিয়ে শ্রীমতী ডিস-ডেবারেরই কায়দায় নিজের কপালে বসিয়ে শ্রীমতী ডিস-ডেবারকে বললেন, “কাগজটা এবার আমার কপালে চেপে ধরে থাকুন।” শ্রীমতী ডিস-ডেবার কপালে কাগজটা চেপে ধরলেও কাগজের একটা কোণ ছিড়ে চিহ্ন দিয়ে রাখলেন; একসময় জাদুকর কার্ল বললেন, “এবার কাগজটা কপাল থেকে তুলে ভঁজ খুলুন।” ভজ খুলতেই চমকে গেলেন শ্রীমতী ডিস-ডেবার, ভেতরে অনেক কিছু লেখা রয়েছে, অবাক হলেন জুরিরা এবং সেইসঙ্গে অবাক হলেন শ্রীমতীর এই খেলা দেখেই এতদিন যারা বিস্মিত হয়েছিলেন, তাঁরাও। জাদুকর কার্ল এবার একটা রাইটিং-ঢাড় দেখালেন, প্যাডের সব পাতাই সাদা। প্যাডটি খবরের কাগজে জড়িয়ে একদিক ধরতে দিলেন এক সাংবাদিককে, আর একদিক ধরলেন নিজে। একটু পরেই খসখস্ করে লেখার আওয়াজ পেলেন সাংবাদিক। আওয়াজ থামতে খবরের কাগজ থেকে প্যাডটা বের করতেই দেখা গেল প্যাডের সবগুলাে পৃষ্ঠা লেখায় ভরে গেছে। বিস্মিত জুরিদের ও দর্শকদের যখন কার্ল বললেন—এই দুটো খেলার কোনটাই