সে-যুগের শিক্ষাক্ষেত্রেও ছিল প্রচণ্ড ধর্মীয় প্রভাব। ধর্মীয় বিশ্বাসকেই অভ্রান্ত বলে মেনে নিয়ে শিক্ষা দেওয়া হতাে। সাধারণের মধ্যেও ধর্মান্ধতা ছিল গভীর ও ব্যাপ্ত। বাইবেল-বিরােধী মত প্রকাশের জন্য মহামান্য পােপ ক্ষিপ্ত হলেন, ক্ষিপ্ত হলাে ধর্মর্যাজক ও ধর্মান্ধ মানুষগুলাে। ব্রুনাে বন্দি হলেন। ধর্ম-বিরােধী মত পােষণের অপরাধে ব্রুনােকে আটকে রাখা হয়েছিল এমন এক ঘরে, যার ছাদ ছিল সীসেতে মােড়া। গ্রীষ্মে ঘর হতাে চুল্লি, শীতে বরফ। এমনি করে দীর্ঘ আট বছর ধরে তার উপর চলেছে ধর্মীয় নির্যাতন।
১৬০০ খ্রিস্টাব্দে পবিত্র ঈশ্বর-প্রেমীরা তথাকথিত সত্যের পূজারিরা ব্রুনােকে শেষবারের মতাে তাঁর মতবাদকে ভ্রান্ত বলে স্বীকার করতে বলল। অসীম সাহসী। ব্রুনাে সেই প্রস্তাব প্রচণ্ড ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করলেন। বাইবেল বিরােধী অসত্য ভাষণের জন্য ব্রুনােকে প্রকাশ্য স্থানে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হলাে। অনুমান করে নিতে অসুবিধে হয় না, সেদিনের দর্শক হিসেবে উপস্থিত মূখ জনতা লেলিহান আগুনে এক সত্যের পূজারিকে ধ্বংস হতে দেখে যথেষ্ট উল্লসিত হয়েছিল। গ্যালিলিও গ্যালিলেইকেও ধর্মান্ধদের বিচারে অধার্মিক ও অসত্য মতবাদ প্রচারের অপরাধে জীবনের শেষ আট বছর বন্দি জীবন কাটাতে হয়েছে।
কিন্তু এত করেও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ও ঈশ্বরের পুত্রেরা সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর ঘােরা বন্ধ করতে পারেনি। খ্রিস্টজন্মের প্রায় ৪৫০ বছর আগে আনাক্সাগােরাস বলেছিলেন, চন্দ্রের গ্যালিলিও গ্যালিলেই নিজস্ব কোনও আলাে নেই। সেইসঙ্গে আরও বলেছিলেন, চন্দ্রের হ্রাস-বৃদ্ধির কারণ। চন্দ্রগ্রহণের কারণও তিনি ব্যাখ্যা করতে সমর্থ হয়েছিলেন।