পাতা:অশনি সংকেত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত সেদিন এক বিপদ । রাধিকানগরের বাজারে পরদিন বহলোকের সামনে পাঁচু কুন্ডুর চালের দোকান লািঠ হোল । দিনমানে এমন ধরণের ব্যাপার। এ সব অঞ্চলে কখনো ঘটে নি । গঙ্গাচরণও সেখানে দাঁড়িয়ে । একটা বটতলায় বড় আটচালাওয়ালা দোকানটা । প্রথমে লোকে সবাই এলো চাল কিনতে, তারপর কিসে যে কি হোল গঙ্গাচরণ জানে না, হঠাৎ দেখা গেল যে দোকানের চারিপাশে একটা হৈচৈ গোলমাল। মেলা লোক দোকানে ঢুকচে আর বেরচ্চে । ধামা ও থলে হাতে বহলোক মাঠ ভেঙে বাঁওড়ের ধারে-ধারের পথে পড়ে ছটচে। সন্ধ্যার দেরি নেই বেশি, সন্যদেব পাটে বসে-বসে। গাছের মাগডালে রাঙা রোদ । একজন কে বললে-উঃ, দোকানটা কি করেই লািঠ হচ্চে । গঙ্গাচরণও গিয়েছিল চাল কিনতে । হাতে তার চটের থলে । কিন্তু দোকানে দোকানো ঘরে সে দেখলে চালের বাজারে সাড়ে বারো টাকা দর। গত হাটবারেও ছিল দশ টাকা চার আনা, একটা হাটের মধ্যে মণে একেবারে ন’সিকে চড়ে যাবে। এ তো স্বপ্নের অগোচর । চাল কিনবে কি না-কিনবে ভাবচে, এমন সময় বিষম হৈচৈ । লোকের ভিড় ক্রমশঃ পাতলা হয়ে আসচে, সবাই উধৰ বাসে ছটাচে । কেউ চাল নিয়ে ছটাচে, কেউ শািন্ধ হাতে । গঙ্গাচরণ বিমাঢ়ের মত দাঁড়িয়ে ভাবচে তখনও, চাল কিনবে কিনা -এমন সময় পেছন থেকে দ'জন লোক এসে ওর ঘাড়ের ওপর পড়লো, তার মধ্যে একজন ওকে জাপটে ধরলে জোর করে ওর চটের থলে সদ্ধ । গঙ্গাচরণ চমকে উঠে বললে-কে ঐ কি ? ককাশ কন্ঠে কে একজন অঙ্গপস্ট দিবালোকে বলে উঠলো-চাল নিয়ে পালাচ্চো শালাহাতে-নাতে ধরেচি ! গঙ্গাচরণ ঝাঁকি মেরে উঠে বললে-কে চাল চুরি করেচে। ঠ লোক চেনো না ? লোক দ’জন ওর সামনে এসে ভাল করে মািখ দেখলে । গঙ্গাচরণ চিনলে ওদের, বনোবেড়ের দফাদার সাধাচরণ মন্ডল এবং ঐ ইউনিয়নের জনৈক চৌকিদার। ওরা কিন্তু লগাচরণকে চেনে না । চৌকিদার বললে-শালা, লোক সবাই ভালো । সকলকেই আমরা চিনি । চাল ফেলেলিঃ *'gन्म ? r -আমার নাম গঙ্গাচরণ পন্ডিত, নতুন গাঁয়ে আমার পাঠশালা। চাল কিনতে এসেছিলাম বাপ, ব্রাহ্মণকে যা তা বোলো না। আমায় সবাই চেনে এ দিগরে। ছেড়ে Tig সাধাচরণ দফাদার ওর সামনে এসে মাখ ভালো করে দেখে বললে-এ দেখচি পরিানো fাগী চোর। এর নাম মনে পড়াচে না, বাঁধো একে । ঠিক সেই সময় নতুন গাঁয়ের তিনজন লোক এসে পড়াতে গঙ্গাচরণ দাগী চোর ও চুরির অভিযোগ থেকে নিস্তার পেলে । এমন হাঙ্গামে গঙ্গাচরণ পড়ে নি জীবনে । গঙ্গাচরণের ফিরতে রাত হয়ে গেল সেদিন । অনঙ্গ-বেী বসে আছে চালের আশায় । Fত রাত কখনো হয় না হাট করতে যেয়ে। ব্যাপার কি ? ト-o