পাতা:অশনি সংকেত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অশনি-সংকেত ক্ষেত্র কােপালী বললে-ও দাদাঠাকুর, এ যে ভয়ানক কান্ড দেখছি। খাবা কি ? গঙ্গাচরণ ও ক্ষেত্রে কােপালী সাপ্লাই অফিসারের অফিসে এসে দেখলে সেখানে রথযাত্রার ভিড়। আপিসঘরের জানলা দিয়ে পারমিট বিলি করা হচ্চে, লোকে জানলার কাছে ভিড় করে দাঁড়িয়ে পারমিট নিচ্চে। সে ভিড়ের মধ্যে ছত্রিশ জাতির মহাসম্মেলন। দস্তুরমত বলবান ব্যক্তি ছাড়া সে ব্যুহ ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ অসম্ভব। ঘরের মধ্যে থেকে মাঝে মাঝে তাড়া শোনা যাচ্চে, লোকজন কিছু কিছ, পিছিয়ে আসচে, কিছদ্ম্মক্ষণ পরেই আবার পড়বের অবস্থা, ভিড়ের স্থিতিস্থাপকত্ব দিব্যি বেশি। গঙ্গাচরণ। হতাশভাবে কিছদ্মক্ষণ অপেক্ষা করলে। ভিড় কমবার নাম নেই,-বরং ক্রমবর্ধমান । গরমও তেমনি, আকাশে মেঘ জমে গমন্টের সন্টি করেচে। এক ঘণ্টা কেটে গেলা-হঠাৎ কম্প করে জানলা বন্ধ হয়ে গেল । শোনা গেল হাকিম আহার করতে গেলেন, আবার কখন আসবেন তার কিছ, ঠিক নেই । ভিড় ক্রমে পাতলা হয়ে এল-লোকজন কতক গিয়ে আপিসের সামনে নিমগাছের তলায় বসে বিড়ি টানতে লাগলো। ক্ষেত্র কােপালী বললে-ঠাকুরমশাই, কি করবেন ? --বসি এসে । -চলন, বাজারে গিয়ে খোঁজ করি। যদি দোকানে পাই । এ ভিড়ে ঢুকতি পারবেন। a 1 বাজারে গিয়ে প্রতি দোকানে খোঁজ করা হােল । জিনিস নেই কোনো দোকানে । পাতিরাম কুন্ডুর বড় দোকানে গোপনে বললে---সাজি দিতে পারি, দেড় টাকা সের। লািকয়ে নিয়ে যাবেন সন্দের পর । ক্ষেত্র কপালী বললে-আটা আছে ? -আছে, বারো আনা করে সেরা । - --দেড় টাকা সের। সন্দের পর বিক্রি হবে। গঙ্গাচরণ হিসেব করে দেখলে, কাছে যা টাকা আছে তাতে বিশেষ কিছু কেনা হবে না। পারমিট পেলে সস্তায় কিছু বেশি জিনিস পাওয়া যেতে পারে। আবার ওরা দজনে সাপ্লাই অফিসারের আপিসে এল, তখন ভিড় আরও বেড়েচে, কিন্তু জানলা খোলে নি । একজন বন্ধ ব্রাহ্মণ বসে আছেন । গঙ্গাচরণ বিড়ি খাওয়ার জন্য তার কাছে গেল। জিজ্ঞেস করলে--আপনার নিবাস কোথায় ? --মালিপোত । -সে তো অনেক দর। কি করে এলেন ? --হোটে এলাম, আবার কিসে আসবো ? গরীব লোক, এ বাজারে নৌকো কি গাড়ীভাড়া করে আসবার খ্যামিতা আছে ? م -क ८नgदन्म ? --কিছ, খাবার নেই ঘরে । আমার বিধবা পিসী ঘরে, তাঁর একাদশী আসচে। দশমীর। দিন রাত্তিরে দাখানা রাটি করেও তো খাবেন । তাই আটা নিতে এসেচি। -চাল পাচ্ছেন। ওদিকে ?