পাতা:অসমীয়া সাহিত্য.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসমীয়া সাহিত্যের শৈশব ও কৈশোর (; একত্র বিচার করাই সমীচীন। প্রথম ও দ্বিতীয় যুগের ডাকের বচন, বিহুনাম, কন্যা বারমাহী, গ্রাম্য গীত, আইনাম প্রভৃতি যে নিদর্শনগুলি আমাদের যুগে পেশছিয়াছে সেইগুলি ভাষাতাত্ত্বিকের দিক হইতে দেখিলে ইহা সুনিশ্চিতভাবে বলা কঠিন যে সেইগুলি আদিম যুগেরই রচনা। প্রধানতঃ এই সব গীতি কবিতা লোকের মুখে মুখে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া চলিয়া আসিতেছে। সেইসঙ্গে সমসাময়িক ভাষার পরিবতন ও পরিবধান অবশ্যম্ভাবী। তবে এইগুলি অপেক্ষাকৃত পরের যুগের হইলেও প্রাচীন যুগের র.প বহন করিয়া লইয়া আসিয়াছে, সেইজন্য এইগুলির সাহিত্যিক বিচার আদিম যাগেই নির্ণয করা হইয়াছে। ঐতিহাসিকদের মতে আসামে প্রথম সামাজিক গোষ্ঠী গঠিত হয় অস্ট্রিকদের আগমনে। তাহারই উত্তরাধিকারী হিসাবে অনেকে খাসি, জয়ন্তীয়া ও মোরানদের দেখাইয়া দেন। মাতৃতন্ত্রপ্রধান কৃষিগ্রামীণ সভ্যতা অস্টিকদের দান। মাদ্রাজের ডাঃ এরহেনফেলস দক্ষিণ ভারতীয় মাতৃতান্ত্রিক সভ্যতার সহিত আসামের খাসিদের সাংস্কৃতিক ঐক্য আছে প্রমাণ করিয়াছেন। বিহুনাচ ও গান, বহৎ প্রস্তর স্তম্ভ (megaliths), প্রস্তর কুঠার প্রভৃতি যন্ত্র এক প্রাচীন মাতৃতন্ত্রবাদের ঐতিহ্যের পরিচায়ক। বিহুনাচ প্রভৃতি উৎসব (বোহাগবিহু, কাতিবিহু, মাঘবিহু) আসামের অতি জনপ্রিয় ও পুরাতন উৎসব। সুপণ্ডিত শ্রীযন্ত রাজমোহননাথ তত্ত্বভূষণ মহাশয় এই উৎসবগুলিকে অস্টিক যুগের সমারক বলিয়া মনে করেন। খাসিদের মধ্যে নংক্রিম নাচ আজও বিশেষভাবে প্রচলিত। তাঁহার মতে গ্রামীণ ও কৃষি সভ্যতার অঙ্গ সবরপে ভূমাতার শস্যদান মানবীয মিলন, গভীধারণ, জন্মদান ইত্যাদি র পকরপে কলিপত হইয়াছে। বৈশাখ মাসে বোহাগবিহু উৎসবে মিলনেচ্ছ যবেক যাবতীরা উন্মুক্ত ক্ষেত্রে শস্যরোপণের পবে কামোদ্দীপক নত্যগীতাদি করিত। মাতা বসন্ধেরাকে তাহারা শস্যদানের উপযুক্তা করিয়া তুলিত—অশোকবক্ষে রোপিত হইত। অম্বুবাচী বা আমাতি মাতার রজসবলা হইবার দিন এবং চারিদিন পরে শসা বপনের দিন। কাতিবিহুতে ভূমাতা শসাবতী হইয়াছেন, তাহাকে নানারপ মন্ত্রপত করিয়া গভীপথ সেই শস্যসন্তানকে নিয়মিত সময়ে গ্রহণ করিতে হইবে। অগ্রহায়ণে শস্য উৎপাদন ও কতন শেষ হইলে পৌষের শেষে উত্তরায়ণের প্রথমে মাঘবিহু—মাতা প্রচুর শস্য দিয়াছেন—দীয়তাং ভুজ্যতাং—অগ্নি সংযোগ দ্বারা তাঁহাকে সপেথ ও সবল রাখা কতব্য। তাই দিকে দিকে বহ্নাৎসবের ব্যবসথা। কিন্তু আবার কোনো কোনো পণ্ডিত বলেন যে ঋগ্বেদেও অতিরাত্র, মহাব্রত ও বিষ,বাহ প্রভৃতি যজ্ঞের উল্লেখ আছে। ঐতরেয় ব্রাহরণে যজ্ঞকুণ্ডের পাশেপাশে রাত্রির তিন যামে উপাসকরা সোমপার হাতে ঘুরিতেছেন ও মন্ত্রপাঠ করিতেছেন ইহা দেখা যায়--- তুলসীর গোরে গোরে মাগপাহ ঘরে। কালো ৰডু খবর্ণকার কোঁকড়ানো চুল, নাক চ্যাপটা, ঠোঁটপরা, নিগ্রোবটরি রক্ত আসামের নাগাদের মধ্যে কিছু কিছ রহিয়া গিয়াছে। নাংগা বলিতে সবগ হইতে আগত বোঝায়। বশী, দা, শাঁখ, কড়ি, চিত্রবিচিত্র শিরোভূষণ নাগাদের বৈশিষট্য। আঙ্গামীরা হাতির দাঁতের কাজে সাপট। ইহারা প্রস্তরাস্ত্র যুগের (eolithic) মানুষ। শিকার ও কন্দমল খড়িয়া জীবিকা নিবাহ করিত। তাহাদের ভাষার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় নাই। প্রাগৈতিহাসিক কালে তাহার পর