পাতা:অসমীয়া সাহিত্য.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२ অসমীয়া সাহিত্য দিনের শেষ, স্য পাটে বসিয়াছেন, ঈষৎরক্ত আকাশের নীলিমায় আসন্ন সন্ধ্যার আনত ছায়া, মহামায়া নামিতেছেন। তাঁর হাতে সোনার বাঁশী, আর কমলের ফল। দুখীয়ালৈ পেলাই দিছে সখিল ফলের মালা গজেন্দ্রগামিনী দগতিনাশিনী আইদেবী কৈলাস হইতে এমনি এক মায়ামন্থর, সান্ধ্যক্ষণে ভক্তের পজা গ্রহণ করিতে নামিলেন ঘাটের পরে – পিচলারে ঘাটে আইয়ে স্নান করে লাহর কেশ টারি মেলি কেশবতী কন্যা তিনি—দীঘল চুল। আই হচ্ছেন গরীবের দেবতা দুখীয়ার '। তাঁর নাম শীতলা দি যোঁরা ব্যক জরাই—তাঁহাকে পাইলে বক জড়াইয়া যায়, প্রাণটা শীতল হয়। ভক্ত গোসানী জিজ্ঞাসা করিতেছে—কি দিয়া তোমায় পাজা করিব, ফল, দুধ, ধন, জল, অন্ন, বস্ত্র, মন, চিত্ত— যেই বস্তু দিওঁ মাতৃ সেই বস্তু চুবা আপোনার নামে মাতৃ সন্তুটি হোবা । পতলা নবম ও দশম শতাব্দী হইতে শ্রীহট্ট কামরুপ ও আসামের অন্যত্র বৌদ্ধ তান্ত্রিকতার প্রসারের যুগ বলিয়া ঐতিহাসিকেরা মনে করেন। লামা তারানাথের উক্তি এই যুক্তি সমর্থন করে। এই যুগের সংস্কৃত সাহিত্যের একটি উল্লেখ পাওয়া যায়। ঐতিহাসিক মতে জয়ন্তীয়া রাজা কামদেব, ভোজবমর্ণ নামে পড়ববঙ্গের এক রাজার নিকট হইতে কবিরাজ পণ্ডিত নামে এক সংস্কৃতজ্ঞ কবিকে (একাদশ শতাব্দীতে) লইয়া আসেন। তিনি বিজয় রাঘবীয় নামে এক মহাকাব্যের রচয়িতা । মধ্যযুগীয় আসামে বহন তন্ত্রমন্ত্রের প্রচার ছিল এবং এইসব তন্ত্রমন্ত্র, তাহাদের ব্যাখ্যা, প্রকরণ নানা পুথিতে লিপিবদ্ধ হইয়াছিল। ফলে এক বিরাট মন্ত্রসাহিত্য গড়িয়া উঠিয়াছিল। তখনকার দিনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে লোকমত, ক্লিয়াকলাপ ও বিশ্বাসের মানদণ্ড হিসাবে এই মন্ত্রগুলির বিশেষ মাল্য আছে। সাহিত্যের দরবারে দেওয়ান-ই-খাসে পথান না পাইলেও দেওয়ান-ই-আমে ইহার সথান আছে। ঠিক কোন শতাব্দীতে এই মন্ত্রসাহিত্যের উৎপত্তি তাহার সঠিক নির্ণয় অসম্প্রভব। তবে ভাষাগত বিচার, ইতিহাসের ধারা, বৌদ্ধতান্ত্রিকতার অপভ্রংশ-যুগের কাহিনীর মাল্য সব দিয়া বিশ্লেষণ করিলে মনে হয়, বাংলার কিছর অংশ ও কামরুপ জড়িয়া এইসব মন্ত্রের ও ডাকের বচনের উৎপত্তি অষ্টম নবম শতাব্দী হইতে। তাহার পর শতাব্দীর পর শতাব্দী বাহিয়া এইসমস্ত প্রাচীন বচন ও মন্ত্র জনসাধারণের সমতিতে ও শ্রুতিতে অক্ষয় হইয়া আছে, কখনও কখনও লিপিবন্ধ হইয়া পুথিতে আশ্রয় লইয়াছে। অথবা বেদই এইসব মন্ত্রপথির আদি, ইহার পস্ট উল্লেখ অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। ব্রহণকরতী পথিতে পড়ি— “অনন্ত শয্যাত গোঁসাই শুতি আছিলন্তে। রাজ ভৈলা চারি বেদ নিঃশ্বাস কাঢ়ন্তে। অথব বেদর অরণ্য করতী কহে। করতী মন্ত্র জগততে রহে ।”