পাতা:অসমীয়া সাহিত্য.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミb অসমীয়া সাহিত্য ভক্তের ভগবান তাহাকে অবশ্য আশ্বাস দিলেন। কিন্তু লক্ষ্য করিবার বিষয় যে তিনি দটের দমন শিটের পালন এসব কথা না বলিয়া একেবারে বেদান্তের চরমে উঠিয়া বলিলেন কে কার সত্রী, কে কার পত্র, কে কার পিতা মাতা, যেন গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অজনকে উপদেশ দিতেছেন— না কান্দা না কান্দা বাপ ন কর সন্তাপ কৈব ভার্যাপত্রে দেখা কৈর মার বাপ। অসমীয়া জনমনে রামায়ণের প্রভাব অত্যন্ত প্রবল। রাম ও সীতার চিরন্তনী বিরহমিলন-কাহিনী, লোকচিত্তকে সহজেই আকৃটি করিত। শ্রীযন্ত বাণীকণ্ঠ কাকতির মতে দেওপবতে দশম একাদশ শতাব্দীর ভগ্ন মন্দিরের স্তপে রাম লক্ষণের ও হনুমান সমগ্রীব প্রভৃতি ভক্তদের মতি পাওয়া গিয়াছে। অসম প্রাদেশিক মিউজিয়ামে একটি রামমতিও পাওয়া গিয়াছে। একাদশ শতাব্দীর রাজা ইন্দুপালের তাম্রশাসনেও রামচন্দ্রের উল্লেখ আছে। বাংলাদেশে পালসাম্রাজ্যের শেষ সন্য সম্রাট রামপালদেবের জীবনী অবলম্বনে সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিত অযোধ্যাপতি রামচন্দ্রের জীবনীর ব্যর্থবোধক ভঙ্গীতে লিখিত। কিন্তু কাকতি মহাশয় যে ‘রাম নেী হত্ততেই রামায়ণ’, ‘রামে মারিলেও মরা, রাবণে মারিলেও মরা’, ‘কালনেমির লঙ্কাভাগ ইত্যাদি যেসব প্রবাদের উল্লেখ করিয়াছেন সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হইবার উপায় নাই, কারণ ঠিক ঐসব প্রবাদই বাংলাদেশে অতি প্রাচীন কাল হইতেই প্রচলিত আছে। শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রচন্দ্র লেখার তাঁহার অসমীয়া রামায়ণী সাহিত্য আলোচনায় প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে রামের উল্লেখের নানা দশটান্তের বিচার করিয়াছেন। বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মগ্রন্থ ও কথাকাহিনীতে রামচন্দ্রের বহর উপাখ্যান পাওয়া যায়। ইহা হইতে প্রমাণিত হয় যে ভারতে রামায়ণী কথা অতি প্রাচীনকালেই সুপ্রচলিত ছিল। জৈন পদ্মচরিত, বৌদ্ধ দশরথজাতক, রাম লক্ষমণ দশরথের কথা পাওয়া যায়। দশরথজাতকে সীতাকে দশরথের কন্যা বলিয়া অভিহিত করিয়াছে। সমজাতকে বারাণসীর রাজা অন্ধমুনির পত্রকে শব্দসন্ধানী বাণীবারা নিহত করিয়াছেন এই কাহিনী আছে। এইগুলি ঠিক কোন শতাব্দীতে রচিত সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে, তবে প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যে রামায়ণী কথা প্রকাণ্ড বনস্পতিরাপে শিকড় গাড়িয়াছিল ইহা ইতিহাসসম্মত । মাধবকদলীই রামায়ণী কবিদের মধ্যে প্রথম ও প্রধান। অসমীয়া সাহিত্যিকদের মতে অসমীয়া ভাষায় চারি প্রকার রামায়ণ পাওয়া যায় : (১) পদ রামায়ণ (২) কথা রামায়ণ (৩) গীতি রামায়ণ (৪) কণীত নীয়া রামায়ণ। মাধবকন্দলী, অনন্তকন্দলী, শঙ্করদেব, মাধবদেব প্রভৃতি কবিগণ বহন রামায়ণী পদ রচনা করিয়া গিয়াছেন । কবি দগাবর গীতিরামায়ণকার ও অনন্তঠাকুর আতা কাঁতনীয়া রামায়ণকার বলিয়া পরিচিত। ইহা ব্যতীত শঙ্করদেব রামবিজয় বা সীতাম্বয়ম্বর, মাধবদেব রামভাওনা, অনন্তকন্দলী, সীতার পাতালপ্রবেশ প্রভৃতি রচনা করিয়াছিলেন। মন্ত্রগীতি পথিতে বিয়াগীত প্রভৃতিতেও বহন রামকাহিনী সথান পাইয়াছে।