পাতা:অসাধারণ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমপিটিশন SOS --বেশ করিচিস । যা চা নিয়ে আয় কারুয়া অনেক দিনের চাকর ; আগে শিবশঙ্করের বাড়ীতে ছিল, এখন কাজকর্ম্মের সুবিধের জন্যে ওকে আপিসে নিজের খাসকামরার চাকর রেখেচেন শিবশঙ্কর। শিবশঙ্কর কি খান না খান, কি তার অভ্যোস, কারুয়া এ সব জানে। কারুয়ার আনীত চায়ের পেয়ালাতে চুমুখ দিয়ে শিবশঙ্কর বাবু ভাবছিলেন আরও কিছু জমির সন্ধান নিতে হবে । জমি বড় দরকার । এই সব অঞ্চলে বড় বড় প্লটের সন্ধানে আছেন । শিবশঙ্কর কাগজকলমে ছোট্ট একটু হিসেব করে নিলেন। লাখ দুই টাকার জমি কিনে রাখতে হবে। টালিগঞ্জের দিকে কিছু জমি এখনো আছে। ব্যাঙ্কের জাম কিছু আছে লেক আর ঢাকুরে যাদবপুর অঞ্চলে। ‘টাকা হোলে মাটি করে।” মন্ত বড় কথা। অত বড় ইনভেস্টমেণ্ট নেই টাকার। দালালের নানারকম সন্ধান নিয়ে আসে। তার টেবিলের ডুয়ারে আছে জমিজমা-সংক্রান্ত নানা রকম খবর, দালালদের দেওয়া। শিবশঙ্কর বাবু ডুয়ার খুলে অৰ্দ্ধ-অন্যমনস্ক ভাবে সেগুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে যেতে লাগলেন। মেদিনীপুর জেলায় শালের জঙ্গল একশে কুড়ি বিঘে এক প্লটে । ধানের জমি ওই সাথে এক প্লটে সত্তর বিঘে, মাঝখানে বড় পুকুর। বৰ্দ্ধমান জেলায় ধানের জমি নব্বই বিঘে। বানপাশ স্টেশনের কাছে। কুমারাডি কয়লাখনির এক তৃতীয়াংশের মালিকানা স্বত্ব, বড় বাংলোঘর, ইদারা, ছোট বাগান একত্রে। রানাঘাট টাউনে রেলের নিকট স্টেশন রোডের ওপর দুখানা বাড়ি, রেলের ওপারের বাইশ বিঘের সেগুন বাগান, ইটের ভঁাটা । যশোর জেলায় মৌজা ধরমপুর ও মৌজা চণ্ডীরামপুর-দুইটি বড় মৌজা নীলামে উঠেচে। সামনের মাসের বারোই তারিখে যশোর সদরে নীলাম হবে।