পাতা:অসাধারণ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գo অসাধারণ কয়েকটি মেয়ে ওকে নিমন্ত্রণ ক’রে নিয়ে গেল। তারা সকলেই একবাক্যে সুলেখার রূপের প্রশংসা করলে, ঢা থেয়ে বসে রান্না-বান্নবি গল্প করলে । এরা চোখ থাকতে অন্ধ নাকি ? এমন যে সুন্দর লাইলাক-রঙের জরিপাড় শাডি পরে আছে সুলেখা, তার দিকে কারও চোখ গেল না ? কেউ বল্লেনা সে-কথা ? না বল্পে বিখ্যাত ছবি 'মায়ামুকুর’ সম্বন্ধে পুড়িয়ে-খেতে একটা বাকি। সুলেখা ওদের কাছে “মায়ামুকুর’এর গল্পটা করেচে, ওর সন্ম গানগুলিই সে গাইতে পারে এ-কথাও জানিয়ে দিয়েছে, অথচ-গান গাইতে বল্লে ও না তাকে কেউ ! হিরন্ময় মিত্রের গান সবগুলো-কে জানেন হিরন্ময় মিত্রকে, তার সুকণ্ঠকে ? সুলেখার ইচ্ছে হোলো, এই মূঢ় অশিক্ষিতা মেয়েগুলোর সামনে একবার হারমোনিয়মটা টেনে নিয়ে ‘চাঁদের দেশের রাজকুমারী’র কিংবা ‘এবার ফাস্তুন এলে এসে এসো'র অপূর্ব সুর-পুঞ্জে ঘর ভরিয়ে দেয় । কারণ, যে-বাড়িতে ওকে নিয়ে গিয়েছিল, একটা ভাঙা হারমোনিয়ম ছিল সোঁ-বাড়িতে। একটি এগারো-বারো বছরের ছোট মেয়ে বেসুরে একটা সেকেলেশু্যামাসঙ্গীতও গেয়েছিল-- বোধহয় তাকেই বিশেষ ক’বে শোনাবার জন্যেই । এ-গ্রামে কেউ বোধহয় খবর রাখে না যে সে একজন গায়িকা ? বাড়ি ফিরে দেখলে, ওর জ। তালের বঙা ভাজবে ব’লে তালের রস বার করচে। ওকে দেখে বল্লে-রাঙা বেীকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলে তোমরা ? মেয়ের দল বল্লে—তুমি তো আর যাবে না বড়বৌদি, তুমি গেলে অবিশি। আজি খুব ভালো হোতে। আমাদের সে ভাগ্যি কি আর আছে ? নীরদ বল্লে—বোস সবাই। তালের ফুলুরি খাবি। রাঙা-বীে, তুমি তালের গোলাটা করো, আমি কড়ায় তেল চড়িয়ে দিই । একটি ধামা বড় ভেজে যখন ওরা উঠলো তখন রাত ন’টা । মেয়ের দল ইতিমধ্যে দু'দশটা বড় খেয়ে চলে গিয়েচে । সুলেখার এসব কাজ অভ্যাস