পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃভক্তি ও পতিপরায়ণতা।
৯৫

প্রেয়সী, আমি তোমায় প্রাণ অপেক্ষা ভালবাসি, তাহার কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু এ বিষয়ে আমি তোমার অনুরোধরক্ষা করিতে পারিব না। তুমি স্ত্রীজাতি, রাজনীতির মর্ম্ম কি বুঝিবে, এরূপ বিষয়ে তোমাব হস্তার্পণ করা উচিত নহে। খিলোনিস্, এইরূপে হতাদর হইয়া, আপন আবাসগৃহে প্রতিগমন করিলেন, এবং পিতার নিমিত্ত নিতান্ত আকুলচিত্ত হইয়া, স্বামিসহবাসসুখে বিসর্জ্জন দিয়া, পিতৃসন্নিধানে উপস্থিত হইলেন। সেই অবস্থায় পিতাকে যত দূর সুখে ও স্বচ্ছন্দে রাখিতে পারা যায়, তিনি প্রাণপণে তাহার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। ফলতঃ, তদীয় সন্নিধান, পরিচর্য্যা ও সান্ত্বনাবাদ দ্বারা, লিয়নিডাসের দুঃখ ও শোকের অনেক লাঘব হইযাছিল।

 কিয়ৎ দিন পরে, লিয়নিডাসের অবস্থার পরিবর্ত্ত হইল। তিনি পুনরায় রাজপদে প্রতিষ্ঠিত হইলেন। তদ্দর্শনে খিলোনিস্, আহ্লাদসাগরে মগ্ন হইয়া পতিগৃহে প্রতিগমন করিলেন, এবং পতির অগোচরে ও অসম্মতিতে পিতৃসন্নিধানে গমন করিয়াছিলেন, তৎপ্রযুক্ত তাঁহার নিকট যে অপরাধিনী হইয়াছিলেন, তজ্জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করিলেন। তিনি, তদীয় বিনয় ও আত্মীয়বর্গের অনুরোধের বশীভূত হইয়া, অবশেষে তাহাঁর অপরাধ-মার্জ্জনা করিলেন।

 জামাতা যে অনিষ্টাচরণে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন, লিয়নিডাস্ তাহা বিস্মৃত হইতে পারিলেন না, সুতরাং তিনি বৈরনির্য্যাতনে উদ্‌যুক্ত হইলেন। তখন ক্লিয়ম্ব্রোটস্‌কে প্রাণবিনাশশঙ্কায়,