পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুরুষজাতির নৃশংসতা।
১০১

অরণ্যে প্রবেশ করিল, এবং প্রাণভয়ে দ্রুতপদে ধাবমান হইয়া, অরণ্যের অতি নিবিড় অংশে উপস্থিত হইল। ভয়ে ও শ্রমে সে নিতান্ত নির্বীর্য্য হইয়াছিল, এক গণ্ডশৈলের নিকটে গিয়া, আর চলিতে না পারিয়া ভূতলে পতিত হইল।

 এই সময়ে, ঐ প্রদেশের অধিপতির কন্যা ইয়ারিকোনাম্নী কামিনী, যদৃচ্ছাক্রমে সেই স্থানে ভ্রমণ করিতে আসিযাছিল। সে ঐ স্থানে উপস্থিত হইযা এক য়ুরোপীযকে মৃতকল্প পতিত দেখিয়া, প্রথমতঃ চকিত হইযা উঠিল, কিন্তু তদীয় আকার দর্শনে বুঝিতে পারিল, এ ব্যক্তি বিপদগ্রস্ত হইয়া এরূপ অবস্থাপন্ন হইয়াছে। স্ত্রীজাতির অন্তঃকরণ স্বভাবতঃ দয়ার্দ্র ও স্নেহপূর্ণ। ইঙ্কলের এই অবস্থা দেখিয়া,ইয়ারিকোর অন্তঃকরণে স্নেহ ও দয়ার সঞ্চার হইল। তখন সে, সঙ্কেতবিশেষ দ্বারা অভয়প্রদান করিয়া, ইঙ্কলকে এক গিরিবিবরে লইয়া গেল। সে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় অতিশয় কাতর হইয়াছে বুঝিতে পারিয়া, স্বল্প সময়ের মধ্যে সুস্বাদু ফল মূল সংগৃহীত করিয়া, আহারার্থে প্রদান করিল, এবং পানার্থে এক নির্মল নির্ঝর দেখাইয়া দিল। এইরূপে ক্ষুন্নিবৃত্তি ও পিপাসা-শান্তি হইলে, ইঙ্কলের শরীরে বলাধান হইল, তখন সে, সঙ্কেত দ্বারা সেই কামিনীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করিল। কিয়ৎক্ষণ পরে ইয়ারিকো তথা হইতে প্রস্থান করিল, এবং একখানি সুদৃশ্য পশুচর্ম্ম আনিয়া, তাহার শয়নার্থে প্রদান করিল। সে দিবস সায়ংকাল পর্য্যন্ত সেই স্থানে থাকিয়া, তাহাকে সঙ্কেত দ্বারা অভয়প্রদান পূর্বক,