বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দয়ালুতা ও ন্যায়পরতা।
১২১

হইল না। তিনি তাহাকে তৎক্ষণাৎ অধিকতরদূরবর্ত্তী আশ্রমান্তরে প্রেরিত করিবার আদেশপ্রদান কবিলেন, মিশনরি-ভৃত্যদিগের নির্দয় প্রহার ও অরণ্যে কণ্টকাবৃত স্থানের অতিক্রম দ্বারা, তাহার সর্বাঙ্গে যে ক্ষত হইয়াছিল, তাহার শোষণের নিমিত্তও ঐ পাপীয়সীকে দুই চারি দিন সেই পবিত্র আশ্রমে অবস্থিতি করিতে দিলেন না।

 অরুনোকোনদীর তীরে মিশনরিদিগের যে আশ্রম ছিল, ঐ হতভাগা নারী অবিলম্বে তথায় প্রেরিত হইল, আর যে পুত্রদিগের স্নেহের বশীভূত হইয়া, এত কষ্ট ও এত যাতনা সহ্য করিয়াছিল, একবার একক্ষণের জন্য তাহাদের মুখ দেখিতে পাইল না। এই আশ্রমে নীত হইয়া, সে নিতান্ত হতাশ ও শোকে একান্ত অভিভূত হইল, এবং একবারেই আহারত্যাগ ও কতিপয় দিবসেই প্রাণত্যাগ করিল।


দয়ালুতা ও ন্যায়পরতা

জর্ম্মনির সম্রাট দ্বিতীয় জোজেফের এই রীতি ছিল, সামান্য পরিচ্ছদ পরিধান করিয়া, রাজধানীর উপশল্যে একাকী পদব্রজে ভ্রমণ করিতেন। একদা, এক দীন বালক তদীয় সৌম্যমুর্ত্তি দর্শনে সাহসী হইয়া, সহসা তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইল। তাঁহাকে সম্রাট্ বলিয়া জানিত না, একজন সামান্য ধনবান্ ব্যক্তি জ্ঞান করিয়া, অশ্রুপূর্ণলোচনে, কাতরবচনে বলিল, মহাশয়,