পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দয়ালুতা ও ন্যায়পরতা।
১২৫

দেখিয়া আমার বোধ হইতেছে, তুমি অতিশয় মাতৃবৎসল, জগদীশ্বর তোমায় দীর্ঘজীবী ও নিরাপদ করুন। এই বলিয়া সে বলিল, আর চিকিৎসক না হইলেও চলিত। ইতঃপূর্ব্বে একজন আসিয়াছিলেন। তিনি অত্যন্ত দয়ালু, ঔষধের ব্যবস্থা লিখিয়া, টেবিলের উপর রাখিয়াছেন, আমায় অনেক উৎসাহ ও আশ্বাস দিয়া এইমাত্র চলিয়া গেলেন।

 এই কথা শুনিয়া, পুত্রের আনীত চিকিৎসক সেই স্ত্রীলোককে বলিলেন, যদি তোমার আপত্তি না থাকে, তিনি কি ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন, দেখি। সে বলিল আমার কোনও আপত্তি নাই, আপনি স্বচ্ছন্দে দেখুন। তখন তিনি, সেই কাগজ হস্তে লইয়া, সম্রাটের স্বাক্ষরদর্শনে চকিত হইয়া উঠিলেন, এবং বলিলেন, আজ তোমার কি সৌভাগ্যের দিন বলিতে পারি না। আমার পূর্ব্ব যে ব্যক্তি আসিযাছিলেন, তিনি অন্যবিধ চিকিৎসক। তিনি তোমার পক্ষে যে ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন, আমার সেরূপ ব্যবস্থা করিবার ক্ষমতা নাই। তাঁহার ব্যবস্থা দ্বারা তোমার যেরূপ উপকার দর্শিবে, আমার ব্যবস্থায় কোনও ক্রমে সেরূপ হওয়া সম্ভাবিত নহে। অধিক আর কি বলিব, আজ অবধি তোমার দুরবস্থার অবসান হইল। যিনি তোমার আলয়ে আসিয়াছিলেন, তিনি চিকিৎসক বা অন্যবিধ ব্যক্তি নহেন, জর্ম্মনির সম্রাট্ পরম দয়ালু দ্বিতীয় জোজেফ্। তিনি তোমার দুরবস্থাদর্শনে দয়ার্দ্রচিত্ত হইয়া, এই কাগজে তোমাকে অনেক টাকা দিবার অনুমতি লিখিয়া দিয়াছেন।