পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
আখ্যানমঞ্জরী।

নিজে যাহা লইয়া যাইতে পারি, তাহা লইয়া যাইব, সে বিষয়ে কোনও আপত্তি না ঘটে।

 ডিয়ুকপত্নীর প্রার্থনা শুনিয়া, সম্রাট তৎক্ষণাৎ তদ্বিষয়ে সম্মতিপ্রদান করিলেন। অসম্ভব, ভিয়ুক্ ও তদীয় অনুচরবর্গ দুর্গমধ্য হইতে নিষ্ক্রান্ত হইলেন, এবং সম্রাটের শিবিরের মধ্য দিয়া প্রয়াণ করিতে লাগিলেন। সম্রাট ও তাঁহার সেনাপতিগণ, এক অভূতপূর্ব্ব ব্যাপার নয়নগোচর করিয়া, যৎপরোনাস্তি বিস্ময়াপন্ন হইলেন। তাঁহারা দেখিলেন, সর্বাগ্রে ডিয়ুকের পত্নী, তৎপশ্চাৎ ক্রমে ক্রমে অপরাপর সম্ভ্রান্ত স্ত্রীলোক, স্ব স্ব স্বামীকে স্কন্ধে লইয়া অতি কষ্টে প্রস্থান করিতেছেন।

 যৎকালে ডিয়ুকের পত্নী, সম্রাটের নিকট অনুমতিপত্রের প্রার্থনা করিয়া পাঠান, তিনি ও তদীয় সেনাপতিগণ এই বিবেচনা করিয়াছিলেন যে, বসন ভূষণ প্রভৃতি যে সমস্ত মহামূল্য বস্তু আছে, তৎসমুদয় নির্বিঘ্নে লইয়া যাইবার অভিপ্রায়েই, ভিযুকপত্নী তাদৃশ অনুমতিপত্রের প্রার্থনা করিয়াছেন, তৎপরিবর্ত্তে তাঁহারা যে স্ব স্ব স্বামীকে স্কন্ধে করিয়া লইয়া যাইবেন, ইহা, এক মুহূর্ত্তের জন্যও, তাঁহাদের মনে উদিত হয় নাই। এক্ষণে, তাঁহাদের পতিপরায়ণতার ঐকান্তিকতা দর্শনে, সম্রাটের অন্তঃকরণে নিরতিশয় দয়া, বিস্ময় ও সন্তোষের আবির্ভাব হইল। তিনি সেই স্ত্রীলোকদিগকে, মুক্তকণ্ঠে, শতশত সাধুবাদ প্রদান করিতে লাগিলেন।

 ফলতঃ, এই অদৃষ্টচর অশ্রুতপূর্ণ ব্যাপার দৃষ্টিগোচর করিয়া,