বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দয়াশীলতা

ইংলণ্ডের অধীশ্বর তৃতীয় জর্জের জননী অত্যন্ত দয়াশীল ছিলেন, পরের দুরবস্থা শুনিলে সাধ্যানুসারে তদ্বিমোচনে যত্নবতী হইতেন। তিনি অবাধে সংবাদপত্র পাঠ করিতেন। ১৭৪২ খৃষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে, এক ব্যক্তি এই মর্ম্মে বিজ্ঞাপন প্রচারিত করিয়াছিলেন যে, “আমি কিছুকাল সৈন্যসংক্রান্ত কর্ম্মে নিযুক্ত ছিলাম, এক্ষণে দুর্ঘটনাক্রমে যার পর নাই দুরবস্থায় পড়িয়াছি, আমার পরিবার আছে, তাহাদেরও অত্যন্ত দুর্গতি ঘটিয়াছে। যাঁহাদের দয়া ও পরের দুঃখ দূর করিবার ক্ষমতা আছে, তাঁহাদের পক্ষে এই বিজ্ঞাপনই যথেষ্ট। তাদৃশ ব্যক্তিরা অমুকস্থানে আসিলে, আমার পূর্ব্বতন ও ইদানীন্তন অবস্থার সবিশেষ পরিচয় পাইতে পারিবেন।”

 বিজ্ঞাপন দৃষ্টিগোচর করিয়া, রাজজননী নির্দ্দিষ্ট স্থানে গিয়া স্বচক্ষে তাহার অবস্থা দেখিবেন, ও স্বকর্ণে তাহার দুঃখের কথা শুনিবেন, স্থির করিলেন। রাজপথে বহির্গত হইলে, কেহ তাঁহারে জানিতে না পারে, এজন্য তিনি সামান্য বেশে, সামান্য যানে আরোহণ করিয়া, এবং একমাত্র সহচরী সমভিব্যাহারে লইয়া প্রস্থান করিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে তিনি তাহার আলয়ে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, একটি স্ত্রীলোক শয়ন করিয়া আছে, রোগ, শোক ও দৈন্যবশতঃ, তাহার শরীর অত্যন্ত শীর্ণ ও