পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
আখ্যানমঞ্জরী।

উপস্থিত ব্যাপার নির্ব্বাহের সমুদয় আয়োজন হইলে, তিনি তাহাকে অনুচ্চস্বরে বলিলেন, দেখ, যে অভিযোগে তোমার প্রাণদণ্ড হইতেছে, সে বিষয়ে তুমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। কিছুকাল পূর্ব্বে তুমি আমায় অত্যন্ত যাতনা দিয়াছিলে, সেই আক্রোশে আমি নগরাধ্যক্ষের আলয় হইতে স্বর্ণপাত্রের অপহরণ করিয়া উহা তোমার আবাসে রাখিয়া, অমূলক চৌর্য্যাভিযোগে তোমার বধসাধন করিতেছি।

 এই কথা শুনিবামাত্র, ঘাতক, উচ্চৈঃস্বরে, পার্শ্ববর্ত্তী লোকদিগকে সম্বোধন কবিয়া বলিল, এ ব্যক্তি কি বলিতেছে, তোমরা শুনিলে? তখন বিদব্‌মন, অরে দুরাত্মন। তুমি অসন্তোষ প্রদর্শন করিতেছ, এই বলিয়া, এক প্রহারেই তাহার মস্তকচ্ছেদন করিলেন।

 মানুষ, ক্রোধের অধীন ও বৈরসাধনবাসনার বশবর্ত্তী হইলে, ধর্ম্মাধর্ম্মবিবেচনায় এককালে জলাঞ্জলি দেয়।

 যে ব্যক্তির হস্তে বিদবমন্‌কে যাতনাভোগ করিতে হইয়াছিল, তিনি তাহাকে সমুচিত প্রতিফলপ্রদান করিলেন, অতঃপর যাঁহাদের আদেশে তাঁহার যাতনাভোগ ঘটিয়াছিল, তাঁহাদের উপর বৈরসাধনে উদ্‌যুক্ত হইলেন। অভিপ্রেত-সম্পাদনের নিমিত্ত, তিনি নগরপ্রাচীরের সন্নিধানে এক বাড়ী ভাড়া লইলেন, এবং অবিচলিত অধ্যবসায় সহকারে, সুরঙ্গখনন করিতে আরম্ভ করিলেন। অল্পদিনের মধ্যেই, সেই সুরঙ্গ প্রস্তুত হইল। ঐ নগরপ্রাচীর এরূপে নির্ম্মিত হইয়াছিল যে,