পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
আখ্যানমঞ্জরী।

 একদিন দৃষ্ট হইল, সাইরিলো স্বীয় গৃহে কেদারায় বসিয়া, নিদ্রা যাইতেছেন। তিনি, দুই তিন দণ্ড স্থিরভাবে থাকিয়া, যেন কাহারও সহিত কথোপকথন করিতেছেন, এই ভাবে অবস্থিত হইলেন, এবং উচ্চৈঃস্বরে হাস্য ও অবজ্ঞাসূচক অঙ্গুলিধ্বনি করিতে লাগিলেন, অনন্তর, যেন আর কেহ তাঁহার নিকটে দাঁড়াইয়া আছে, এই মনে করিয়া, ঐ দিকে মুখ ফিরাইয়া, তাহার নিকট হইতে নস্য গ্রহণমানসে, অঙ্গুলিবিস্তার করিলেন, কিন্তু তাহা না পাইয়া, যৎপরোনাস্তি বিরক্ত হইয়া, স্বীয় নস্যধানী বহিষ্কৃত করিলেন, তাহাতে কিছুমাত্র নস্য না থাকাতে, অঙ্গুলি দ্বারা তাহার অভ্যন্তরভাগ খুঁটরাইয়া কিঞ্চিৎ গ্রহণ করিলেন, এবং চারি দিকে দৃষ্টিসঞ্চারণ করিয়া, পাছে কেহ উহা লয়, এই আশঙ্কায়, সাবধানে স্বীয় বসনমধ্যে লুকাইয়া রাখিলেন। এইরূপে, কিয়ৎক্ষণ স্তব্ধভাবে অবস্থিত হইয়া, তিনি অকস্মাৎ সাতিশয় কুপিত হইয়া উঠিলেন, এবং ক্রোধভরে অশেষবিধ জঘন্য শপথ ও অভিশাপবাক্যের উচ্চারণ করিতে লাগিলেন। তাঁহার ধর্ম্মভ্রাতৃবর্গ, এতাবৎ কাল পর্য্যন্ত, কৌতুক দেখিতেছিলেন, এক্ষণে ঐ সকল কুৎসাপূর্ণ বাক্য শ্রবণে বিরক্ত হইয়া, স্ব স্ব আবাসগৃহে প্রতিগমন করিলেন।

 আর এক দিন, তিনি, স্বপ্নাবেশে শয্যাপরিত্যাগ করিয়া, উপাসনাগৃহে প্রবিষ্ট হইলেন, এবং তত্রত্য তৈজস দ্রব্যসমূহের অপহরণমানসে, তৎসমুদয়ের অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। দৈবযোগে, ঐ সমস্ত দ্রব্য, পরিষ্কৃত করিয়া আনিবার নিমিত্ত, স্থানা -