পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
আখ্যানমঞ্জরী।

অভিলাষ প্রকাশ করিয়া যান, যেন্‌ তাঁহার কলেবর ঐ ধর্ম্মাশ্রমের কোনও স্থানে সমাহিত হয়। তদনুসারে, তাঁহার কলেবর তথায় নীত, এবং তদীয় মহামূল্য পরিচ্ছদ ও সমস্ত আভরণের সহিত, মহাসমারোহে সমাহিত হইল। উল্লিখিত ব্যাপারের সমাধানসময়ে আশ্রমস্থ ধর্ম্মভ্রাতৃবর্গ সমবেত হইয়া, যৎপরোনাস্তি শোকপ্রকাশ ও সেই নারীর পারলৌকিকমঙ্গলকামনায় জগদীশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিতে লাগিলেন। এই সময়ে সাইরিলো যেরূপ অকৃত্রিম শোক, পরিতাপ ও মঙ্গলকামনা করিয়াছিলেন, বোধ হয় আর কেহই সেরূপ করিতে পারেন নাই।

 পরদিন প্রাতঃকালে, আশ্রমবাসীরা অবলোকন করিলেন, সেই নারীর সমাধিস্থান উদ্ঘাটিত হইয়াছে, তদীয় কলেবর সর্ব্বাংশে বিকলিত হইয়াছে, যে সকল অঙ্গুলিতে অঙ্গুরীয় ছিল, তৎসমুদয় ছিন্ন ও মহামূল্য পরিচ্ছদ অপহৃত হইয়াছে। এই অতিবিগর্হিত ধর্ম্মবহির্ভুত ব্যাপার দর্শনে সকলেই সাতিশয় শোকাকুল ও বিস্ময়াপন্ন হইলেন, এবং যে নরাধম দ্বারা এই জঘন্য কাণ্ড সম্পন্ন হইয়াছিল, সকলেই তাহাকে লক্ষ্য করিয়া, একবাক্য হইয়া, যথোচিত তিরস্কার করিতে লাগিলেন। এই বিষয়ে সাইরিলো সর্ব্বাপেক্ষায় সমধিক ক্ষুব্ধ ও শোকাকুল হইয়াছিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে, তিনি আপন আবাসগৃহে প্রবিষ্ট হইলেন, এবং স্বীয় শয্যাতলে বস্তুবিশেষের অন্বেষণে প্রবৃত্ত হইয়া দেখিলেন, ঐ নারীর পরিচ্ছদ, অলঙ্কার প্রভৃতি সমস্ত বস্তু সেই স্থানে স্থাপিত আছে। তখন, গত রজনীতে তিনিই ঐ সমস্ত