পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অকুতোভয়তা।
৪৭

ব্যাপার সম্পন্ন করিয়াছেন, ইহা বুঝিতে পারিয়া, সাইরিলো শোকে ও পরিতাপে ম্রিয়মাণ হইলেন। অতি বিষম অনুতাপানলে তাঁহার হৃদয় দগ্ধ হইয়া যাইতে লাগিল। তিনি ক্ষণবিলম্ব ব্যতিরেকে, ধর্ম্মভ্রাতৃবর্গকে সমবেত করিয়া, গলদশ্রুলোচনে, শোকাকুল বচনে, সমস্ত বর্ণন করিলেন। অনন্তর, সকলে একমতাবলম্বী হইয়া তাঁহার সম্মতিগ্রহণ পূর্ব্বক, তাঁহাকে আশ্রমান্তরে প্রেরিত করিলেন। তত্রত্য প্রধান ব্যক্তির এরূপ ক্ষমতা ছিল, তিনি আবশ্যক বোধ করিলে, কোনও ব্যক্তিকে গৃহবিশেষে রুদ্ধ করিয়া রাখিতে পারেন। এই আশ্রমে সাইরিলো রজনীযোগে এক গৃহে রুদ্ধ থাকিতেন, সুতরাং, স্বপ্নাবেশে গৃহ হইতে বহির্গত হইয়া, যথেচ্ছাচারণ করিতে পারিতেন না।

অকুতোভয়তা

ফরাসিদেশে দেশুলিয়র নামে এক সদ্বংশসম্ভূতা কামিনী ছিলেন। তিনি অসাধারণ কবিত্বশক্তি দ্বারা স্বদেশে বিলক্ষণ প্রতিপত্তিলাভ করেন এবং সর্ব্বপ্রকার লোকের নিকট সাতিশয় আদরণীয় হয়েন।

 একদা তিনি লুনিরেলের কৌণ্ট ও কৌণ্টেসের[১] সহিত সাক্ষাৎ করিবার নিমিত্ত তাঁহাদের বাসস্থানে গমন করিলেন।


  1. কৌণ্ট - ফ্রান্স প্রভৃতি য়ুরোপীয় জনপদে সম্ভ্রান্ত লোকদিগের পদবীবিশেষ। কৌণ্টের সহধর্ম্মিণীর পদবী কৌণ্টেস্‌।