পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
আখ্যানমঞ্জরী।

হইল। ঐ বাটীতে এক বৃহৎ কুকুর ছিল। দেশুলিয়র দেখিলেন, ঐ কুক্কুরের কর্ণ ধরিয়া আছেন। ভয়ঙ্কর ভৌতিক ব্যাপারের এইরূপে পর্য্যবসান হওয়াতে, তিনি উচ্চৈঃস্বরে হাস্য করিতে লাগিলেন, অনন্তর সেই কুকুরের কর্ণপরিত্যাগ পূর্ব্বক, নিশ্চিন্ত হইয়া শয়ন করিয়া রহিলেন।

 এদিকে, কৌণ্ট ও কৌণ্টেস্, শয়নাগারে প্রবেশ করিয়া, যৎপরোনাস্তি উদ্বেগ ও দুর্ভাবনায় রজনীযাপন করিলেন, একবারও নয়ন মুদ্রিত করিতে পারিলেন না। তাঁহারা এই বিষয়ের যত আন্দোলন করিতে লাগিলেন, উত্তরোত্তর ততই ব্যাকুল হইতে লাগিলেন। অবশেষে, তাঁহারা এই সিদ্ধান্ত করিলেন, আমরা প্রাতঃকালে উঠিয়া, দেশুলিয়রেব প্রাণত্যাগ হইয়াছে, অবধারিত দেখিতে পাইব। রজনী অবসন্ন হইবামাত্র, তাঁহারা শয়নাগার হইতে বহির্গত হইয়া, বিষণ্ন বদনে অবসন্ন গমনে ভূতাবিষ্ট গৃহের দ্বারদেশে উপস্থিত হইলেন, সাহস করিয়া, সহসা সেই গৃহে প্রবেশ করিতে পারিলেন না। কিয়ৎক্ষণ পরে প্রবেশ করিয়াও, কথা কহিতে তাঁহাদের সাহস হইল না। রাত্রিতে কি সর্ব্বনাশ ঘটিয়াছে, কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া, স্তব্ধ ও হতবুদ্ধি হইয়া উভয়ে দণ্ডায়মান রহিলেন।

 তাঁহাদিগকে সমাগত দেখিয়া, দেশুলিয়র মশারির অভ্যন্তর হইতে বিনির্গমন পূর্ব্বক, প্রাতঃকর্ত্তব্য নমস্কারসম্ভাষণাদি করিয়া, সহাস্য মুখে তাঁহাদের সম্মুখে দণ্ডায়মান হইলেন। তাঁহাকে জীবিত, অক্ষতশরীর ও প্রফুল্লচিত্ত দেখিয়া, তাঁহাদের কলেবরে