পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অকুতোভয়তা।
৫৩

প্রাণসঞ্চার হইল। রাত্রিতে যার পর যে ঘটনা হইয়াছিল, তিনি তৎসমুদয়ের অবিকল বর্ণন করিতে লাগিলেন। শুনিতে শুনিতে, তাঁহাদের হৃৎকম্প হইতে লাগিল। অবশেষে, দেশুলিয়র কৌণ্ট মহাশয়কে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, এ বিষয়ে আপনকার বিলক্ষণ ভ্রম জন্মিয়া আছে, এবং প্রশ্রয় দেওয়াতে, সেই ভ্রম, ক্রমে বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছে। আর আপনকার ঈদৃশ অমূলক কুসংস্কার থাকা উচিত নহে। আপনারা যাহাকে ভূত বলিয়া স্থির করিয়া রাখিয়াছেন, ঐ দেখুন, সে শুইয়া রহিয়াছে। এই বলিয়া অঙ্গুলিনির্দেশ পূর্ব্বক, তিনি ঐ কুক্কুর দেখাইয়া দিলেন, এবং হাস্যমুখে রাত্রিবৃত্তান্তের শেষ ভাগের বর্ণনা করিলেন।

 সবিশেষ সমস্ত শ্রবণগোচর করিয়া, তাঁহারা স্ত্রী-পুরুষে চমৎকৃত হইলেন। অনন্তর, দেশুলিয়র পুনরায় কৌণ্টকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, ভবাদৃশ ব্যক্তির ঈদৃশ কুসংস্কারের বশীভূত হওয়া উচিত নহে। দেখুন, এই অমূলক কুসংস্কারের দোষে, আপনাদের অন্তঃকরণে কত শঙ্কা জন্মিয়াছিল। গত রাত্রিতে আমার কি বিপদ ঘটে, এই দুর্ভাবনায় আপনারা কত অসুখে কালযাপন করিয়াছেন, বলিতে পারি না। লোকে যে সকল ব্যাপারের প্রকৃত কারণে নির্ণয় করিতে না পারে, উহাদিগকে অলৌকিক ঘটনা জ্ঞান করিয়া থাকে। তৎপরে তিনি দ্বারদেশে উপস্থিত হইলেন, এবং প্রত্যহ চাবি দিয়া দ্বার রুদ্ধ করিয়া রাখে, অথচ, কুকুর কিরূপে দ্বার খুলিয়া গৃহে প্রবেশ