পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
আখ্যানমঞ্জরী।

মধ্যে আসিয়া, তাহার সহিত সাক্ষাৎ ও কথোপকথন করিত। ক্রমে ক্রমে ঐ ব্যক্তির উপর হাঁচেনের অনুরাগসঞ্চার হয়। সে তাহাকে সুবোধ ও সচ্চরিত্র ব্যক্তি বলিয়া বোধ করিত। কিন্তু বটেলব, বাস্তবিক সেরূপ লোক নহেন। হাঁচেন ব্যতিরিক্ত ব্যক্তিমাত্রেই তাহাকে অলস, অকর্ম্মণ্য ও দুশ্চরিত্র বলিয়া জানিত। গৃহস্বামী তাহাকে বিলক্ষণ চিনিতেন, এজন্য তাহাকে তাঁহার বাটীতে আসিতে নিষেধ করিয়া দিয়াছিলেন। তদনুসারে, সে আর তাঁহার বাটীতে প্রবেশ বা হাঁচেনের সহিত সাক্ষাৎ করিতে পারিত না। হাঁচেন সেজন্য অতিশয় দুঃখিত ছিল। রবিবার প্রাতঃকালে গৃহস্বামীর অনুপস্থিতিরূপ সুযোগ দেখিয়া, সে নির্ভয়ে ঐ বাটীতে আসিযাছিল।

 হাঁচেন, তাহাকে সমাগত দেখিয়া, আহ্লাদে পুলকিত হইল, সাদর সম্ভাষণ পুরঃসর তাহাকে বসাইয়া, উত্তম ভক্ষ্য দ্রব্য আনিয়া আহার করিতে দিল, এবং তাহার নিকটে বসিয়া, প্রফুল্লচিত্তে কথোপকথন করিতে লাগিল। আহার করিতে করিতে, বটেলরের হস্ত হইতে ছুরীখানি ভূমিতে পডিয়া গেল, অথবা সে ইচ্ছা করিয়া ফেলিয়া দিল, এবং হাঁচেনকে ঐ ছুরী তুলিয়া দিতে বলিল। হাঁচেন্ হাস্যমুখে পরিহাস করিয়া বলিল, সকলে বলে, তুমি অত্যন্ত অলস ও অকর্মণ্য লোক, এ কথা নিতান্ত অলীক বোধ হইতেছে না, নতুবা, ছুরীখানি আপনি না তুলিয়া, আমায় তুলিয়া দিতে বলিবে কেন। ছুরী, আমার অপেক্ষা তোমার নিকটে আছে। সুতরাং তুমি অনায়াসে