পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
আখ্যানমঞ্জরী।

লইয়া গেলে পর, প্রভু আমায় চোর বলিয়া সন্দেহ করিবেন; এবং তদুপলক্ষে অনেক শাস্তি পাইতে ও লাঞ্ছনাভোগ করিতে হইবে। সুতরাং আমি কোনও ক্রমে আর এখানে থাকিতে পারিব না, তদপেক্ষা তোমার সঙ্গে যাওয়াই, আমার পক্ষে সর্ব্বাংশে শ্রেয়স্কর। অতএব আমার কথা শুন, গ্রীবা ছাড়িয়া দাও, সত্বর কার্য্য সম্পন্ন কর, তাঁহাদের আসিবার অধিক বিলম্ব নাই, তাঁহারা আসিয়া পড়িলে তোমার সকল চেষ্টা বিফল হইবে, এবং উভযেই মারা পড়িব।

 হাঁচেনের কথা শ্রবণগোচর করিয়া, সে তাহার মতানুবর্ত্তী হইয়াছে বলিয়া, বটেলরের নিশ্চিত বোধ জন্মিল। তখন সে তাহার গ্রীবা ছাডিয়া দিল। হাঁচেন, সেই দুরাত্মাকে প্রভুর শয়নাগারে লইয়া গেল, যে করণ্ডকে তাঁহার সম্পত্তি স্থাপিত ছিল, দেখাইয়া দিল, এবং গৃহের কোণ হইতে, এক কুঠার আনিয়া, তাহার হস্তে দিয়া বলিল, এই কুঠার লইয়া করণ্ডক ভগ্ন কর, কেবল হস্তদ্বারা কৃতকার্য্য হইতে পারিবে না। সত্বর কার্য্য শেষ কর। এই অবকাশে আমি একবার উপরে যাই, আমার যে দ্রব্যসামগ্রী আছে, ও এতদিন কর্ম্ম করিয়া যাহা সঞ্চয় করিয়াছি, সমুদয় লইয়া আসি। হাঁচেনের ভাবদর্শনে ও বাক্যশ্রবণে, সেই দুরাত্মা অতিশয় সন্তুষ্ট হইল, এবং প্রদর্শিত করণ্ডক ভাঙ্গিয়া, তন্মধ্য হইতে অর্থের নিষ্কাশন করিতে লাগিল। হাঁচেন, এইরূপে সেই দুরাচারের হস্ত হইতে নিস্তার পাইয়া, গৃহ হইতে বহির্গত হইল, এবং মুহূর্ত্তমাত্র ইতস্ততঃ ভ্রমণ