পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আশ্চর্য দস্যুদমন।
৬৯

অবধারিত বন্ধ থাকে, কেহ কখনও উহা চলিতে দেখে নাই। কিন্তু আজ যদি মিল চালাইয়া দি, তাহা হইলে প্রতিবেশীরা নিঃসন্দেহ বোধ করিবে, অবশ্যই কোনও অসামান্য ব্যাপার ঘটিয়াছে, এবং সেরূপ বোধ হইলে অনেকে এস্থানে উপস্থিত হইতে পারে। আর, প্রভুও দূর হইতে দেখিতে পাইয়া, এরূপ বিরূপ ঘটনার কারণনির্ণয করিতে না পারিয়া, ব্যস্ত হইয়া গৃহে প্রত্যাগমন করিতে পারেন।

এই স্থিব করিয়া, হাঁচেন মিল্ চালাইতে চলিল। বহু দিন ঐ বাটীতে থাকাতে, সে মিল্ চালাইবার প্রণালী বিলক্ষণ অবগত ছিল, এক্ষণে মিল্‌ঘরে প্রবেশ করিয়া, মুহূর্ত্তের মধ্যে কল চালাইয়া দিল। সমুদয় যন্ত্র প্রবলবেগে চলিতে আরম্ভ করিল। চক্র ও যন্ত্রের অপরাপর অবয়ব হইতে ভয়ঙ্কর শব্দ উত্থিত হইতে লাগিল। এই সময়ে, সেই দস্যু অতি কষ্টে গর্ত্ত দ্বারা প্রবেশ করিয়া, মিলের বৃহৎ চক্রে দণ্ডায়মান হইল, এবং নিতান্ত অনায়ত্ত হইয়া, সেই চক্রের সঙ্গে ঘুরিতে লাগিল। প্রথমতঃ, সে যন্ত্রের গতি স্থগিত করিবার, তৎপরে ঘূর্ণমান চক্র হইতে অপসৃত হইবার বিস্তর চেষ্টা পাইল, কিন্তু কোনও ক্রমে কৃতকার্য্য হইতে পারিল না। তখন সে ভয়ে ও বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া গেল, এবং প্রতিক্ষণেই প্রাণবিনাশের আশঙ্কা করিতে লাগিল। অবশেষে, প্রাণবক্ষা বিষয়ে নিতান্ত হতাশ হইয়া, সে বিকট আর্ত্তনাদ ও উৎকট আত্মভর্ৎসনা আরব্ধ করিল। হাঁচেন, অসম্ভাবিত আর্তনাদ শ্রবণে চকিত হইয়া,