পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আশ্চর্য্য দস্যুদমন।
৭১

 অবশেষে, হাঁচেন বহির্দ্বারের কপাটে উৎকট আঘাত শুনিয়া, সত্বরগমনে তথায় উপস্থিত হইল, এবং স্বীয় প্রভুকে প্রত্যাগত দেখিয়া, অবিলম্বে দ্বার খুলিয়া দিল। গৃহস্বামী সপবিবারে ও সমবেত প্রতিবেশিবর্গ সমভিব্যাহারে বাটীতে প্রবেশ করিলেন। তিনি, রবিবারে মিল চলিতে দেখিয়া, যৎপুরোনাস্তি বিস্ময়াবিষ্ট হইয়া আসিয়াছিলেন, পরে বাটীর বহির্ভাগে পঞ্চমবর্ষীয় বালককে বদ্ধহস্ত বদ্ধপদ, ভূতলে নিক্ষিপ্ত, এবং বহির্দ্বার রুদ্ধ দেখিয়া, কি সর্বনাশ ঘটিয়াছে কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া, নিবতিশয় ব্যাকুলচিত্ত হইয়াছিলেন, এজন্য নিতান্ত ব্যগ্র হইয়া, হাঁচেনকে এই সমস্ত বিরূপ ঘটনার কারণ জিজ্ঞাসিলেন। সে, সংক্ষেপে সমস্ত বৃত্তান্ত বিদিত করিয়া, মুর্চ্ছিত ও ভূতলে পতিত হইল। গৃহস্বামী, অনেক কষ্টে তাহার চৈতন্যসম্পাদন করিলেন। অনন্তর সকলে মিলঘরে প্রবেশ করিয়া, যন্ত্রের গতি স্থগিত করিলেন। অচেতন দস্য তন্মধ্য হইতে নিষ্কাশিত হইল। পরে, সকলে গৃহস্বামীর শনাগারের দ্বার উদ্ঘাটিত করিয়া, বটেলবকে রুদ্ধ করিলেন। উভয়ে তৎক্ষণাৎ রাজপুরুষদিগের হস্তে সমর্পিত হইল, এবং অনতিবিলম্বে উৎকট অপরাধের সমুচিত প্রতিফল পাইল। গৃহস্বামী, হাঁচেনের মুখে আদ্যোপান্ত সমস্ত বৃত্তান্ত সবিশেষ অবগত হইয়া, তদীয় অদ্ভুত সাহস, অবিচলিত প্রভুভক্তি ও নিরতিশয় প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দর্শনে মোহিত ও চমৎকৃত হইলেন, এবং এই সমস্ত অসাধারণ গুণের যথোপযুক্ত