পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আখ্যানমজ্ঞরী

তাঁহাকে পথ দেখিতে পাইলে, সকলে হাততালি ও গালাগালি দিত; বালকেৱা, ঐ অমুক যায় বলিয়া, হাসি ও তামাসা করিত, এবং ডেলা মারিত। তিনি তাহাতে কিঞ্চিমাত্র ক্ষুব্ধ, দুঃখিত, বা চলচিত্ত হইতেন না; তাহাদের দিকে দৃকপাত না করিয়া, সহাস্য বদনে, চলিয়া যাইতেন।

 এইরূপে, গয়ট্ জীবদ্দশায, সকলের অশ্রদ্ধাভাজন ও উপহাসাস্পদ হইছিলেন বটে, কিন্তু মৃত্যুকালে, স্বীয় সমস্ত সম্পত্তির যেরূপ বিনিয়োগ করিয়া যান, তদ্দৃষ্টে সকলে বিস্ময়াপন্ন হইযাছিলেন; এবং আন্তরিক ভক্তি সহকারে মুক্তকণ্ঠে সাধুবাদ প্রদান ও প্রশংসা কীর্ত্তন করিয়াছিলেন। তিনি বিনিয়োগপত্রে লিখিয়া যান, বাল্যকালে, অত্রত্য হীনাবস্থ লোকদিগের জলকষ্ট দেখিয়া, আমার অন্তঃকরণে অতিশয় দুঃখ উপস্থিত হইত। অনুসন্ধান দ্বারা জানিতে পারিযাছিলাম, প্রচুর অর্থ ব্যতিরেকে, ঐ ভয়ানক কষ্টের নিবারণের আর উপায় নাই। এজন্য প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম, প্রাণপণে যত্ন ও পরিশ্রম করিয়া, অর্থোপার্জ্জন করিব, এবং কোনও বিষয়ে কিছুমাত্র ব্যয় না করিয়া, উপার্জ্জিত সমস্ত অর্থ উল্লিখিত জলকষ্টের নিবারণার্থে য়খে, সঞ্চিত করিয়া রাখিব। এই প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমি যাবজ্জীবন, প্রাণপনে