পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃভক্তি ও ভ্রাতৃবাৎসল্য।
১০৫

পাইতেন, তাহা হইলে তিনি নিঃসন্দেহ ইঁহাকে সমস্ত বিষয়ের অধিকারী করিতেন। ইঁহাকে সমস্ত বিষয়ে অধিকারী করা তাঁহাব নিতান্ত বাসনা ছিল। সেই চিরন্তন বাসনা পূর্ণ না হওয়াতে, তিনি নিরতিশয় দুঃখিত হৃদয়ে দেহত্যাগ করিয়াছেন, সে বিষয়ে অণুমাত্র সংশয় নাই। অতএব যাহাতে ইঁহাব মনোদুঃখ দূরীভূত ও পিতার মনস্কাম পূর্ণ হইতে পারে, এরূপ কোনও ব্যবস্থা করা আমার পক্ষে সর্ব্বতোভাবে উচিত ও আবশ্যক।

 এইরূপ আলোচনা করিয়া, একদিন কনিষ্ঠ, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ও কতিপয় আত্মীয়কে আহার করাইবার উদ্যোগ করিলেন। সকলের আহার সমাপ্ত হইলে, জ্যেষ্ঠের সম্মুখে একটি পাত্র স্থাপিত হইল। তিনি মনে করিলেন, আর কোনও আহারদ্রব্য উপস্থিত হইল। পাত্রের আবরণ অপসারিত করিয়া, তিনি তাহাতে আহারদ্রব্যের পবিবর্ত্তে একখানি কাগজ দেখিতে পাইলেন। উপস্থিত আত্মীয়বর্গ কৌতুহল-পরতস্ত্র হইয়া, ঐ কাগজখানি পড়িতে আরম্ভ করিলেন। পাঠ সমাপ্ত হইলে, সকলে সাতিশয় চমৎকৃত ও মোহিত হইয়া, আন্তরিক ভক্তি ও অনুরাগ সহকারে কনিষ্ঠকে সাধুবাদ প্রদান করিতে লাগিলেন।

 ঐ কাগজখানি দানপত্র। উহার মর্ম্ম এই—পিতৃদেব আমার জ্যেষ্ঠকে স্বীয় সমস্ত সম্পত্তির অধিকারী করিবেন,