পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মাতৃভক্তির পুরস্কার।

হইয়াছিল। বালক নিতান্ত ভীত হইল, কোনও উত্তর করিতে পারিল না। এই সমযে, সহসা তাহার হস্ত বগলিতে পতিত হইলে, তন্মধ্যে টাকার থলি দেখি, অতিশয় বিস্ময়াপন্ন হইল, এবং বিষন্ন বদনে কাতর নয়নে, রাজার দিকে চাহিয়া রহিল। তাহার নয়নযুগল হইতে প্রবলবেগে প্রভূত বাষ্পবারি বিনির্গত হইতে লাগিল, ভয়ে ও বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া, সে একটিও কথা বলিতে পারিল না।

 তাহার এইরূপ ভাব দেখিয়া, রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, অহে বালক, কি জন্য এত কাতর হইতেছ ও রোদন কবিতেছ, বল। তখন বালক, জানু পাতিযা, ভূতলে উপবিষ্ট হইল, এবং কৃতাঞ্জলি হইযা, অশ্রুপূর্ণ লোচনে, কাতর বচনে বলিল, মহাবাজ, এই টাকার থলি কিরূপে আমাৰ বগলিতে আসিল, কিছুই বুঝিতে পাবিতেছি না। কোনও ব্যক্তি, নিঃসন্দেহ আমার সর্ব্বনাশের চেষ্টায় আছে, সেই আমার নিদ্রিত অবস্থায, এই টাকার থলি বগলিতে রাখিয়া গিযাছে, অবশেষে, আমি চুরি করিয়াছি বলিয়া, আমায় ধরাইয়া দিবে। এই বলিতে বলিতে, তাহার সর্ব্বশরীর কাঁপিতে লাগিল।

 বালকের মাতৃভক্তির বিষয় অবগত হইযা, রাজা প্রথমতঃ যত আহলাদিত হইয়াছিলেন, এক্ষণে, তাহার এই ভাব দেখিয়া, তদপেক্ষা অনেক অধিক আহলাদিত