পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
আখ্যানমঞ্জরী

আপনি যে আহার দিবেন, আজ আমি তাহার মূল্য দিতে পারিব না। অঙ্গীকার করিতেছি, যত শীঘ্র পারি, আপনার এই ঋণের পরিশোধ করিব, কদাচ তাহার অন্যথা হইবে না। পান্থনিবাসের কর্ত্রী তাহার প্রার্থনা শুনিয়া, যথেষ্ট গালি দিলেন, এবং বলিলেন, আমি পরিশ্রম করিয়া যে উপার্জ্জন করি, তোর মত লোককে খাওইয়া তাহা নষ্ট করিতে পাবিব না। তুই, এখনই এখান হইতে চলিয়া যা।

 এই কথা শুনি, সে চলিয়া যাইবার উপক্রম করিলে, তথায় উপস্থিত এক ভদ্র ব্যক্তি, তাহার আকার প্রকার দর্শনে, স্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন, সে, যথার্থই, ক্ষুধায় অতিশয় কাতর হইযাছে। তখন তিনি পান্থনিবাসের কর্ত্রীকে বলিলেন, এ ব্যক্তির যাহা আবশ্যক হ্য়, দাও, আমি তাহার মূল্য দিব। আহার সমাপ্ত হইলে, আমেরিকার লোকটি, আহারদাতার নিকটে গিয়া, ভক্তিপূর্ব্বক নমস্কার করিয়া, বিনয়নম্র বচনে বলিল, আপনি আমার উপর যে দয়াপ্রকাশ করিলেন, আমি কখনও তাহা বিস্মৃত হইব না। এই বলিযা, সে ব্যক্তি প্রস্থান করিল।

 ইংরেজেরা, ইষ্টসিদ্ধির নিমিত্ত আমেরিকার আদিম নিবাসীদের উপর যৎপরোনাস্তি অত্যাচার করিতেন, এজন্য, তাঁহাদের, উপর, তাহাদের ভয়ানক বিদ্বেষ জন্মিয়া