পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
আখ্যানমঞ্জরী।

 এইরূপে, সেনাপতির আজ্ঞালঙ্ঘন জন্য, গুরুতর অপরাধ হওয়াতে, দণ্ড দিবার নিমিত্ত, সে সেনাসংক্রান্ত বিচারালয়ের সম্মুখে নীত হইল। তুমি এই অপরাধ করিয়াছ কি না? এই জিজ্ঞাসা করাতে, সে, স্পষ্টবাক্যে স্বীকার করিল, এবং বলিল, যদি ও ব্যক্তির প্রাণরক্ষা হয়, তাহা হইলে, আমি স্বচ্ছন্দ মনে, প্রাণ দিতে প্রস্তুত আছি। এই কথা শ্রবণে, সত্যি বিস্ময়াপন্ন হইয়া, সেনাপতি বলিলেন, তুমি পরের জন্য অকাতরে প্রাণ দিতে সম্মত হইতেছ, ইহার কাবণ কি। বুঝিতে পারিতেছি না।

 এই কথা শুনিয়া, সেই সৈনিক-পুরুষ বলিল, ও ব্যক্তি আমার প্রাণদাতা। আমি একবার এইরূপ বিপদে পড়িয়াছিলাম, তখন কেবল উঁহার যত্নে ও চেষ্টায়, আমার প্রাণবক্ষা হইয়াছিল। এখন উনি সেইরূপ বিপদে পডিয়াছেন, উঁহার প্রাণরক্ষা বিষয়ে যথাশক্তি চেষ্টা ও যত্ন না করিলে, আমি নিতান্ত অকৃতজ্ঞ হইব। সেনাপতি, সামান্য সৈনিক পুরুষের এতাদৃশ উন্নতচিত্ততা দর্শনে নিরতিশয় প্রীত ও চমৎকৃত হইয়া, তাহার অপরাধের মার্জ্জনা করিলেন, এবং যে ব্যক্তির প্রাণরক্ষার জন্য, সে অকাতরে প্রাণ দিতে উদ্যত হইয়াছিল, তদীয় কৃতজ্ঞতার পুরস্কারস্বরূপ, সে ব্যক্তিরও প্রাণরক্ষার আদেশ