পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রকৃত ন্যায়পরতা।
৬৯

শিক্ষক, এই কথা বলিয়া, বিরত হইলেন। ইতঃপূর্ব্বে, যে ছাত্রটি ঠিক বানান করিয়াছে বলিয়া, শ্রেণীর প্রথম স্থানে উপবেশিত হইযাছিল, সে বলিল, মহাশয়, আপনি যেরূপ লিখিলেন, তাহা দেখিয়া বুঝিতে পারিলাম, আমি যে বানান করিযাছি, তাহা ঠিক হয় নাই। আমি ঠিক বানান করিয়াছি, এই বোধ করিয়া, আপনি আমায় শ্রেণীর সর্ব্বপ্রথম স্থানে বসাইযাছেন। কিন্তু যখন আমি ঠিক বানান করিতে পারি নাই, তখন আমার এ স্থানে বসিবার অধিকার নাই, অতএব, আমি আপন স্থানে যাই। এই বলিয়া, সেই ছাত্রটি তৎক্ষণাৎ, শ্রেণীর সর্বশেষ স্থানে গিয়া উপবিষ্ট হইল।

 এই শ্রেণী, অতি অল্পবয়স্ক বালকগণে সঙ্ঘটিত। তন্মধ্যে এই বালকটি সকল বালক অপেক্ষা বয়ঃকনিষ্ঠ। এই অল্পবয়স্ক বালকের ঈদৃশ ন্যায়পরতা দেখিয়া, শ্রেণীর শিক্ষক সাতিশয় বিস্মাপন্ন হইলেন, এবং নিরতিশয় প্রীত ও প্রসন্ন হইয়া, তাহার যথেষ্ট প্রশংসা করিতে লাগিলেন। বস্তুতঃ, ঈদৃশ অল্পবয়স্ক বালকের ঈদৃশী ন্যায়পরতা সবিশেষ প্রশংসার বিষয়, তাহার সন্দেহ নাই।