পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
আখ্যানমঞ্জরী।

অনুসন্ধান করিয়া দেখিলে, এইরূপে অতি সামান্য বিষয় হইতেই ঐ সমস্তর সূত্রপাত হইয়াছে। আমি রাজা; আমি যদি মূল্য না দিয়া, অল্পমাত্র লবণ লই, ঐ দৃষ্টান্ত অনুসারে রাজপুরুষেরা মূল্য না দিয়া, অধিক মূল্যের বস্তু সকল লইতে আরম্ভ করিবেন। এইরূপে যাহাদের বস্তু লওয়া যাইবে, রাজা অথবা রাজপুরুষেরা লইতেছেন, কিছু বলিলে তাঁহাদেব কোপে পতিত হইতে হইবে, এই ভযে, কেহ কিছু বলিতে পারিবে না, কিন্তু, মনে মনে গালি দিবে ও নিন্দা করিবে, তাহার কোনও সন্দেহ নাই। ফলকথা এই, ছল, বল, কৌশল, অথবা অন্যবিধ অবৈধ উপায় অবলম্বন পূর্ব্বক, কাহারও কোনও বস্তুতে হস্তক্ষেপ করা যে, যার পর নাই গর্হিত ব্যবহার, তাহার সন্দেহ নাই।

 পৃথিবীর সকল লোকে এই রাজকীয় দৃষ্টান্তের অনুবর্ত্তী হইযা চলিলে, সংসার সর্ব্বাংশে নিরুপদ্রব ও যার পর নাই সুখের স্থান হইয়া উঠে, সে বিষযে অণুমাত্র সংশয় নাই। কিন্তু মানবজাতি, বিশেষতঃ ক্ষমতাপন্ন জাতি ও ব্যক্তিবর্গ, স্ব স্ব আচবণের পূর্ব্বাপর যেরূপ পরিচয় দিয়া আসিতেছেন, তাহাতে কোনও ক্রমে, সেরূপ প্রত্যাশা করা যাইতে পারে না।