পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংসারে নম্র হইয়া চলা উচিত।
৮৫

 আপনকার পিতা অতি মহাশয় লোক ছিলেন; কোনও একটা উপলক্ষ হইলেই, অল্পবয়স্ক ব্যক্তিদিগের হিতার্থে যত্নপূর্ব্বক উপদেশ দিতেন। কড়িকাঠে আমার মাথা ঠোকা গেল দেখিয়া, তিনি সাতিশয় দুঃখপ্রকাশ করিলেন, এবং এই উপলক্ষ করিয়া, আমায় বলিলেন, দেখ, তুমি যৌবনদশায় উপনীত হইযাছ। অতঃপর তোমায় সংসারযাত্রা সম্পন্ন করিতে হইবে। “সংসার অতি বিষম স্থান, অসাবধান ও উদ্ধত হইয়া চলিলে, পদে পদে বিপদে পড়িতে হয়। অতএব, সাবধান ও নম্র হইয়া চলিবে, মস্তক উন্নত করিয়া চলিলে, সর্ব্বদা এইরূপ আঘাত পাইতে হইবে”।

 এই নিরতিশয় হিতকর উপদেশবাক্য শ্রবণ অবধি, সর্ব্বক্ষণ আমার হৃদয়ে জাগরূক রহিয়াছে। ইহা দ্বারা আমি অশেষ প্রকারে উপকার প্রাপ্ত হইয়াছি। যখন দেখিতে পাই, কোনও ব্যক্তি অহঙ্কারে মত্ত হইয়া, মস্তক উন্নত করিয়া, উদ্ধতভাবে চলেন, এবং তজ্জন্য পদে পদে অপদস্থ, অবমানিত ও বিপদ্গ্রস্ত হয়েন, তখন এই উপদেশবাক্যের মহিমা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। ব্যক্তিমাত্রেরই এই উপদেশবাক্যের অনুসরণ করা সর্ব্বতোভাবে উচিত ও আবশ্যক।