পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃবৎসলতা।
২৯

যাহারা অন্যথাচরণ করে, তাহারা বিদ্যালয় হইতে বহিষ্কৃত হইয়া থাকে।

 ইংলণ্ডের এইরূপ কোনও বিদ্যালয়ে, একটি বালক নিযুক্ত হইল। সে সুবোধ, সাবধান, সচ্চরিত্র ও কর্ত্তব্য বিষয়ে সম্যক্‌ অবহিত লক্ষিত হওয়াতে, তথাকার অধ্যক্ষ তাহাকে অত্যন্ত ভাল বাসিতেন। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে, যখন সকল বালক আহার করিতে যাইত, সে বালকও তাহাদের সঙ্গে আহার করিতে বসিত। অন্য অন্য বালকেরা আহারের সময়, গল্প ও আমোদ করিত, কিন্তু সে সেরূপ করিত না। সে, প্রথমে সূপ ভক্ষণ করিয়া, রুটী ও জল খাইয়া উদরপুর্ত্তি করিত, মাংস প্রভৃতি যে সমস্ত উপাদেয় বস্তু প্রস্তুত হইত, তাহা স্পর্শও করিত না। ইহা দেখিয়া তাহার সহচরেরা কারণ জিজ্ঞাসা করিলে, সে কোনও উত্তর দিত না, বিষণ্ণ বদনে মৌন অবলম্বন করিয়া থাকিত।

 ক্রমে ক্রমে এই বিষয় অধ্যক্ষের গোচর হইলে, তিনি তাহাকে কহিলেন, অহে যুবক। তুমি এরূপ আচরণ করিতেছ কেন? তোমায় আহার বিষয়ে, এখানকার নিয়ম অনুসারে চলিতে হইবে, সকলে যেরূপ আহার করে, তোমারও সেইরূপ আহার কবা আবশ্যক। এ সাংগ্রামিক বিদ্যালয়, যে বিষয়ে যে নিয়ম বদ্ধ আছে, কোনও অংশে, তাহার কিছু মাত্র ব্যতিক্রম হইতে পারিবে না, অতএব সাবধান করিয়া দিতেছি, অতঃপর, তুমি রীতিমত আহার করিবে, কদাচ অন্যথাচরণ করিবে না।

 অধ্যক্ষ এইরূপে সাবধান করিয়া দিলেও, সেই যুবক পূর্ব্ববৎ