পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতৃবৎসলতা।
৩১

সেই সুশীল, সুবোধ বালকের এই সকল কথা শুনিয়া অধ্যক্ষ সাতিশয় চমৎকৃত হইলেন, এবং মনে মনে অত্যন্ত প্রশংসা করিতে লাগিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে, তিনি কহিলেন কেন, তোমার পিতা বহুকাল রাজকর্ম্ম করিয়াছিলেন, তিনি কি পেন্‌শন পান নাই? বালক কহিল, না মহাশয়। তিনি পেন্‌শন পান নাই, পেনশনের প্রার্থনায়, এক বৎসর কাল রাজধানীতে ছিলেন, কৃতকার্য্য হইতে পারেন নাই, অবশেষে অর্থাভাবে আর এখানে থাকিতে না পারিয়া, হতাশ হইয়া গৃহে প্রতিগমন করিয়াছেন, তিনি পেন্‌শন পাইলে, আমাদের এত কষ্ট হইত না।

 ইহা শুনিয়া অধ্যক্ষ কহিলেন, আমি অঙ্গীকার করিতেছি, যাহাতে তোমার পিতা পেন্‌শন পান, তাহার উপায় করিব। আর, যখন তোমার পিতার এরূপ দুরবস্থা শুনিতেছি, তখন তিনি, আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্ব্বাহ জন্য, তোমায় আবশ্যক মত অর্থ দিয়াছেন, আমার এরূপ বোধ হইতেছে না, সুতরাং, সে জন্য তোমার বিলক্ষণ কষ্ট হয়, সন্দেহ নাই, আপাততঃ, তুমি তিনটি গিনি লও, ইহা দ্বারা আবশ্যক ব্যয় নির্ব্বাহ করিও, আর যত সত্বর পারি, তোমার পিতার নিকট আগামী ছয় মাসের পেনশন পাঠাইয়া দিতেছি।

 বালক শুনিয়া, আহ্লাদসাগরে মগ্ন হইল, এবং অধ্যক্ষের দত্ত তিনটি গিনি, অনিমিষ নয়নে, নিরীক্ষণ করিতে লাগিল, কিয়ৎক্ষণ পরে কহিল, আপনি আমার পিতার নিকট সত্বর টাকা পাঠাইবেন, বলিলেন, কি রূপে ঐ টাকা পাঠাইবেন? অধ্যক্ষ