পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
আখ্যানমঞ্জরী।
right

পতিত হইবার আশঙ্কা হইত। যাহার আলয়ে লুকাইয়া থাকেন, পাছে সেই ব্যক্তিই ভয়ে প্রকাশ করিয়া দেয়, এই আশঙ্কায় তিনি কোনও স্থানেই নিশ্চিন্ত হইয়া থাকিতে পারিতেন না। কারণ, যাহারা তাঁহাকে লুকাইয়া রাখিবে, অথবা তাঁহার লুকাইয়া থাকিবার স্থান জানিতে পারিয়াও রাজপুরুষদিগের গোচর না করিবে, তাহাদেরও প্রাণদণ্ড অবধারিত ছিল।

 পারিস নগরে পেসক-নাম্নী এক অতি সচ্চরিত্রা দয়াশীলা মহিলা ছিলেন। তিনি অনুসন্ধান করিয়া, এটিয়নের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন, এবং কহিলেন, আপনি যে বিষম বিপদে পড়িয়াছেন, তাহার সবিশেষ অবগত হইয়াছি, আপনি আমার আলয়ে চলুন, সেখানে থাকিলে, কেহই সন্ধান পাইবে না।

 এই প্রস্তাব শ্রবণ করিয়া, এটিয়ন কহিলেন, আপনি যে আমার দুঃখে দুঃখিত হইয়াছেন, এবং এই বিপদের সময় দয়া করিয়া, আশ্রয় দিতে চাহিতেছেন, ইহাতে আমি কি পর্য্যন্ত উপকৃত বোধ করিতেছি, বলিতে পারি না। কিন্তু এ হতভাগ্যকে আশ্রয় দিলে, আপনি নিঃসন্দেহ বিপদ্‌গ্রস্ত হইবেন, আপনার প্রাণদণ্ড পর্য্যন্ত ঘটিতে পারে, এই কারণে, আমি আপনার প্রস্তাবে সম্মত হইতে পারি না। যেরূপ দেখিতেছি, আমার রক্ষার কিছুমাত্র সম্ভাবনা নাই, এমন স্থলে, আমি অকারণে আপনার প্রাণদণ্ডের হেতু হইতে পারিব না।

 এটিয়নের এই কথা শুনিয়া, পেসক কহিলেন, মহাশয়। আপনি অন্যায় কহিতেছেন, আপনার প্রাণরক্ষার চেষ্টা করিলে,