পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
আখ্যানমঞ্জরী।

অসময়ে আশ্রয় দিয়া তাহার প্রাণ রক্ষা করিয়াছে। তখন তিনি হতবুদ্ধি হইয়া অধোবদনে দণ্ডায়মান রহিলেন, এবং কি বলিয়া, পূর্ব্বকৃত নৃশংস আচরণের নিমিত্ত, ক্ষমা প্রার্থনা করিবেন, তাহা স্থির করিতে পারিলেন না।

 তখন সেই অসভ্যজাতীয় ব্যক্তি গর্ব্বিত বাক্যে কহিল, মহাশয়। আমরা বহুকালের অসভ্য জাতি। আপনারা সভ্য জাতি বলিয়া অভিমান করিয়া থাকেন, কিন্তু দেখুন, সৌজন্য ও সদ্ব্যবহার বিষয়ে অসভ্য জাতি সভ্য জাতি অপেক্ষা কত অংশে উৎকৃষ্ট। সে যাহা হউক, অবশেষে, আপনার প্রতি আমার বক্তব্য এই যে, যে অবস্থার লোক হউক না কেন, যখন ক্ষুধার্ত্ত ও তৃষ্ণার্ত্ত হইয়া আপনার আলয়ে উপস্থিত হইবে, তাহাকে উপযুক্তরূপ আহার-আদি প্রদান করিবেন, তাহা না করিয়া, তেমন অবস্থায়, অবমাননা পূর্ব্বক, তাড়াইয়া দিবেন না। এই বলিয়া, নমস্কার করিয়া, সে প্রস্থান করিল।


ভ্রাতৃবিরোধ।

 এক গৃহস্থ ব্যক্তির কিছু ভূমি সম্পত্তি ছিল। তিনি, সাতিশয় যত্ন ও পরিশ্রম সহকারে কৃষিকর্ম্ম করিয়া, স্বচ্ছন্দে সংসারযাত্রা নির্ব্বাহ পূর্ব্বক, বিলক্ষণ সঙ্গতিপন্ন হয়েন। তাঁহার দুই পুত্র ছিল। পাছে উত্তর কালে, বিষয় বিভাগ উপলক্ষ্যে ভ্রাতৃবিরোধ উপস্থিত হয়, এই আশঙ্কায় তিনি, অন্তিম কাল