পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভ্রাতৃবিরোধ।
৬১

উপস্থিত হইলে, বিনিয়োগপত্র দ্বারা উভয়কে যথাযোগ্য বিষয় বিভাগ করিয়া দিয়া যান। তাঁহার এক উদ্যান ছিল, অনবধানতা বশতঃ তিনি বিনিয়োগপত্রে ঐ উদ্যানের কোনও উল্লেখ করিয়া যান নাই।

 তাহারা দুই সহোদরে, ঐ বিনিয়োগপত্র অনুসারে, প্রত্যেকে পৈতৃক বিষয়ের যে অংশ পাইয়াছিল, সুশীল সুবোধ ও পরিশ্রমশালী হইলে, তাহা দ্বারা সুখে, স্বচ্ছন্দে ও সম্মান সহকারে, সংসারযাত্রা নির্ব্বাহ করিয়া যাইতে পারিত। কিন্তু তাহাদের সেরূপ প্রকৃতি ছিল না। বিনিয়োগপত্রে পরিত্যক্ত অবিভক্ত উদ্যান লইয়া, পরস্পর বিরোধ উপস্থিত হইল। সেই উদ্যানের রমণীয়তা ও লাভকরতা উভয় গুণই বিলক্ষণ ছিল, এজন্য উভয়েরই একাকী সম্পূর্ণ উদ্যান অধিকার করিবার সম্পূর্ণ লোভ জন্মিল। সেই লোভ সংবরণে অসমর্থ হওয়াতে উভয়েরই অন্তঃকরণে, ঐ উপলক্ষে, পরস্পরের প্রতি বিষম বিদ্বেষ জন্মিয়া উঠিল। বিষয়লোভ মনুষ্যের অতি বিষম শত্রু। ভ্রাতৃস্নেহ ও হিতাহিতবোধ তাহাদের হৃদয় হইতে এক কালে অন্তর্হিত হইয়া গেল।

 উভয়কে বিবাদে উদ্যত দেখিয়া, প্রতিবেশিগণ, মধ্যস্থ হইয়া, তাহাদের বিরোধ ভঞ্জনের যথোচিত চেষ্টা ও যত্ন করিলেন, কিন্তু কৃতকার্য্য হইতে পারিলেন না। উভয়েই বিদ্বেষবুদ্ধির এরূপ অধীন হইয়াছিল যে, উভয়েই কহিল, সর্ব্বস্বান্ত হয় তাহাও স্বীকার, তথাপি উদ্যানের অংশ দিব না। তাহাদের ঈদৃশ ভাব দর্শনে, সাতিশয় বিরক্ত হইয়া, মধ্যস্থগণ নিরস্ত