পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
আখ্যানমঞ্জরী।

হইলেন। উভয়ের পরমাত্মীয় ও যথার্থ হিতৈষী অতি মাননীয় এক ভদ্র ব্যক্তি, উভয়কে ডাকাইয়া, অশেষ প্রকারে বুঝাইতে লাগিলেন। তিনি কহিলেন, তোমরা কেন অকারণে বিরোধ করিতেছ বল, যেমন উভয়ে, অন্যান্য বিষয়ে, সমাংশভাগী হইয়াছ, বিবাদাস্পদীভূত উদ্যানেও সেইরূপ সমাংশভাগী হও। আমার কথা শুন, অন্যান্য বিষয়ের ন্যায়, উদ্যানও উভয়ে সমাংশ করিয়া লও। রাজদ্বারে আবেদন করিলেও, বিচারকর্ত্তারা সমাংশ ব্যবস্থাই করিবেন, এক জনকে এক বারে বঞ্চনা করিয়া, অপর জনকে কখনই সমস্ত উদ্যান দিবার আদেশ করিবেন না, লাভের মধ্যে, উভয় পক্ষের অনর্থক অর্থব্যয় হইবে, এই মাত্র, আর হয় ত এই বিবাদ উপলক্ষে, উভয়েরই সর্ব্বস্বান্ত হইবে। অতএব, ক্ষান্ত হও, আমি মধ্যবর্ত্তী থাকিয়া সামঞ্জস্য করিয়া, উদ্যানের বিভাগ করিয়া দিতেছি।

 এই হিতোপদেশ শ্রবণ করিয়া জ্যেষ্ঠ কহিল, আপনি আমাদের পরম আত্মীয় ও অতি মাননীয় ব্যক্তি, আপনার উপদেশবাক্য শ্রবণ ও আদেশবাক্য প্রতিপালন করা আমাদের সর্ব্বতোভাবে বিধেয়। কিন্তু অংশ করিয়া লইতে গেলে, এমন সুন্দর উদ্যান একবারে হতশ্রী হইয়া যায়, অতএব, আপনি আমার ভ্রাতাকে বুঝাইয়া বলুন, সে, ন্যায্য মূল্য লইয়া, আমাকে সমুদয় উদ্যান ছাড়িয়া দিউক। কনিষ্ঠও শুনিয়া, ঈষৎ হাস্য করিয়া, অবিকল ঐরূপ প্রস্তাব করিল। আত্মীয় ব্যক্তি বিস্তর বুঝাইলেন ও অনেক প্রকার কৌশল করিলেন, কিন্তু কাহাকেও উদ্যানের অংশ গ্রহণে অথবা মূল্য গ্রহণ পূর্ব্বক অংশ