পাতা:আগামীকাল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডেকে নিয়ে গেল । মিনিট দী-তিনের মধ্যেই সকল্যাণী মিটার সভা-কক্ষে ফিরে এলেন । ওর চোখে মখে উৎকন্ঠার ছাপ। তিনি উপস্থিত সদস্যদের উদ্দেশ্যে কর জোড়ে নিবেদন করলেন, অত্যন্ত দখের সঙ্গে জানাচিছ, আমায় কিছু সময়ের জন্য ছটি দিতে হবে । আকস্মিক উদ্ভিত এক বিপদের জন্যই আমি আপনাদের সঙ্গদান করতে পারছি নে । অনিচ্ছাকৃত অনপস্থিতির জন্য। আশা করি আপনারা আমায় ক্ষমা করে দেবেন। আমাদের সংস্থার সদস্যা কুমারী এনা মােখাজী আজকের সভার আলোচ্য বিষয় সম্পপণ্য অবগত আছে । আর আপনাদের নিম্ঠা ও আগ্রহ সম্পবন্ধেও আমি যথেষ্ট অস্থা রাখি । আপনারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাতে আমার পণ সমর্থন থাকবে । কথা ক'টা কোনরকমে হুড়ে দিয়ে সকল্যাণী মিটার ভেতর-বাড়ির দিকে ছটে গেলেন । এনা। মােখাজাঁর নেতৃত্বে নারীকল্যাণ-সমিতির সভার কাজ শরা হ’ল। উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে অস্বাভাবিক চাঞ্চল্য লক্ষিত হ’ল। সবার চোখেই কৌতমহল ও জিজ্ঞাসার ছাপ। একই প্রশন, হঠাৎ এমন কি আকস্মিক ঘটনা ঘটতে পারে যার ফলে সকল্যাণী মিটারের মত এমন নিম্ঠাবতী মহিলা সভাকক্ষ ছেড়ে যেতে পারেন ? সবার কাছেই ব্যাপারটা কৌতমহলের উদ্রেক করল। খোঁজ নিয়ে জানা গোল, ও’র একমাত্র পত্রিবধর প্রসব-বেদনা উঠেছে । গ্রামেরই এক বন্ধা ও অভিজ্ঞ ধাত্রীকে খবর দিয়ে আনা হয়েছে। বন্ধা ওয় বিদ্যাও দীর্ঘ অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রসতির প্রসব-কাম সম্পন্ন করার জন্য প্রাণান্ত প্রয়াস চালাচ্ছে। কিন্তু হায়! প্রায় এক ঘণ্ট। চেষ্টা করেও কিছতেই কিচ্ছ করতে পারছে। না। আর এদিকে সকল্যাণী মিটার বিষন্ন মথে দরজার সামনে অসহায় ভাবে পায়চারি করছেন। অনিশ্চিত বিপদাশঙ্কায় ওর মগ রন্তু শােণ্য-চকের মত ফ্যাকাসে । নিরাপায় দেখে গাড়ী দিয়ে শহরের হাসপাতালে লোক পাঠিয়েছেন । কিন্তু ঘণ্টা দইয়ের মধ্যে আসার সম্ভাবনা নেই। আবার প্রসতির অবস্থাও এমন সঙ্কটজনক যে, গাড়ী করে হাসপাতালে পাঠাতেও ভরসা পেলেন না । যেকোন সময় অঘটন ঘটে ८ प्र ! বাদ্ধা ধাত্রী ওর অধীত বিদ্যা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শেষ চেণ্টা করে আতুর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এল। ইতিমধ্যে সদস্যারা সভার কাজ মিটিয়ে সকল্যাণী মিটারের কাছে এলেন । মণিও ওদের সঙ্গে রয়েছে । যন্ত্রণাকান্তর প্রসতি ঘরের মধ্যে রীতিমত দাপাদাপি করছে। উপস্থিত মহিলারা পড়ল। মহােফাঁপড়ে। এ-যন্ত্রণা চোখে দেখাও যায় না, আবার করারও কিছু নেই। মানষের বিপদের মহাতে কিছ: করা না যাক, চেন্টালিপ্ত হতে পারলে সবন্তি পাওয়া যায় । ভিড়ের মধ্য থেকে মণি'র কণ্ঠ শোনা গেল, সকল্যাণী দি যদি আপত্তি না থাকে আমি একবারটি চেণ্টা করে দেখতে চাই } সকল্যাণী মিটার ওর কথাটা কানেই নিলেন না। ঠোঁটের কোণে বিদ্রুপের হাসির 6