পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অল্পসমস্যা , १७ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে গেল। সকলেই কিছু কিছু জমিজম যোগাড় ক’রে পায়ের ওপর পা দিয়ে বসে খাবার বন্দোবস্ত করতে লাগল। এই ‘পায়ের ওপর পা দিয়ে বসে খাওয়া কথাটি এখনও দেশে চরম মুখের পরিচায়ক। কিন্তু সবাই মিলে বসে খেতে চাইলে চলবে কেন ? যেমন যুরোপের কলকারখানা এসে আমাদের জোরে ধাক্কা দিল অমনই বসে খাবার স্থখ ঘুচে গেল, আর বসে খাওয়ার প্রবৃত্তিজনিত অলসত। আমাদের সর্বনাশ করলে। আবার র্যাদের টাকা জমেছে তারা হয় কোম্পানীর কাগজ বা মহাজনী করবেন, নয় জমিদারী কিনবেন এবং বংশানুক্রমে তা ভোগ করবেন। এছাড়া টাকা খাটাবার অন্ত কোন মংলব নেই। কাজেই বাঙালীর ব্যবসায়ে প্রবৃত্তি হয়নি। বরং এই সকল কারণে আমাদের মধ্যে অলসতা, শ্রমবিমুখতা, ও বিলাসপরায়ণতা প্রভৃতি দোষ প্রবেশ করেছে। বাঙ লার বারভূইয়া জমিদার ছিলেন । জমিদারী ও চাকরী নবাবী আমল থেকে বাঙালীর রক্তে ও ধমনীতে । কিন্তু এখন আর ওপথে গেলে চলবে না। ডিগ্রী ও চাকুরীর মোহ, জলহাওয়া ও অভ্যাসের দোষ, অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসের বলে ছাড়িয়ে উঠতে হবে । অনেকে অভিযোগ করছেন— আমি লেখাপড় ঘুচিয়ে দিয়ে বাঙালীর ছেলেকে মাড়োয়ারী হ’তে বলছি। বড় বড় যুরোপীয়ান বণিক—তার কি.গগুমুখ ? তাত, বিঠলদাস, ইব্রাহিম করিমভাই-এর কি গওঁ খাঁ ? লেখাপড়ার অভাবে মাড়োয়ারী এদের মত হতে পারেনি, মাড়োয়ারী ব্যবসা শিখলেও শিল্পপ্রতিষ্ঠায় কোন কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি। লেখাপড়া ও ব্যবসা বাণিজ্য পরস্পর-বিরোধী নয়। আমি মাড়োয়ারীকে বলব—", ব্যবসার সঙ্গে লেখাপড়া শেখে ; আর বাঙালীকে বলব—ব্যবসা কর চাকুরীর মায়া ছাড়।