পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৪ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী ংখ্যা লেখাপড়া জানা ব্রাহ্মণের সংখ্যার দ্বিগুণ। আর একটি কথা, বাংলায় বহুকাল হইতে কৈবর্ত্ত, নাপিত, সদেগাপ এবং তিলি প্রভৃতি জাতি জলাচরণীয় বলিয়া পরিগণিত হওয়ায় অনেকটা সুবিধা হইয়াছে। কিন্তু মান্দ্রাজ ও বোম্বাই প্রদেশে লেখাপড়ায় ব্রাহ্মণগণ অন্যান্য জাতির অপেক্ষ অনেক শ্রেষ্ঠ, ফলে ব্রাহ্মণ ও অব্রাহ্মণের মধ্যে বিষম ব্যবধান রহিয়া গিয়াছে। এই ব্যবধানই ঐ দুই প্রদেশে জাতিবিদ্বেষের প্রধান হেতু । অথচ ৪ কোটা ১৫ লক্ষ অধিবাসীর মধ্যে, মাত্র ১৫ লক্ষ ব্রাহ্মণ । সাত আট বৎসর পূর্ব্বে আমি বাঙ্গালীর মস্তিষ্কের অপব্যবহার সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছি তাহ সমগ্র ভারতবর্ষ সম্বন্ধেই খাটে ! সেই জন্য কথাগুলি আমি এখানেও উদ্ধত করিয়া দিলাম —“নবদ্বীপের নব্যন্যায় ও স্মৃতির স্বক্ষ তর্কে বাঙ্গালীর যে বুদ্ধির প্রাথর্য্যের পরিচয় পাওয়া যায়, তাহাতে আমরা গর্ব্ব অনুভব করি সত্য, কিন্তু আমাদের ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে যে-সময়ে স্মার্ত্ত রঘুনন্দন মন্থ, যাজ্ঞবল্ক্য ও পরাশরের পুথি ঘাটিয়া নিয়ম বাহির করিতেছিলেন যে নয় বৎসর বয়সের বালিকা বিধবাকে কিরূপ কঠোর উপবাস করানো আবশ্বক এবং তাহা না করিলে তাহার পিতৃ পুরুষগণ নরকভোগ করবেন ; যে সময়ে রঘুনাথ, গদাধর ও জগদীশ প্রভৃতি প্রসিদ্ধ নৈয়ায়িকগণ প্রাচীন ন্যায়ের টাকা টিপ্পনী লিখিয়া টোলের ছাত্রগণের ভীতি উৎপাদন করিতেছিলেন, যেসময়ে আমাদের জ্যোতিষীগণ, গণনা করিতেছিলেন, নৈঋত কোণে কোন কোন মুহূর্ত্তে কাক ডাকিলে তাঙ্কার ফলাফল কি ; যে-সময়ে আমাদের দেশের পণ্ডিতগণ তাল চিপ, করিয়া পড়ে কি পড়িয়া চিপ, করে এই গুরুতর বিষয় সম্বন্ধে প্রচণ্ড তর্কের দ্বারা সভ্যসমূহের শান্তি ভঙ্গ করিতেছিলেন ; যে-সময়ে নবদ্বীপের বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণ অমূল্য সময়ের