পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৪ মাচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী বটে, কিন্তু তা অন্য প্রকার। আজ যিনি log cabinএ অর্থাৎ কুঁড়ে ঘরে থাকেন, কাল তিনি দেশনায়ক। আমাদের দেশে অন্যপ্রকার দেখতে পাই। মহেন্দ্রলাল সরকার, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল, কৃষ্ণদাস পাল,— এদের মধ্যে একজন সদেগাপ, একজন তত্ত্ববায়, একজন তিলি । এর সমাজের গৌরবস্থল। কিন্তু একজন কুলীন ব্রাহ্মণ ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের পুত্রকে কন্যা দিতে রাজি হবেন না । বলবেন—ও যে তাতির ছেলে। এতে সমাজের কত অবনতি, কত লোকসান হয়েছে। চিকিৎসাশাস্ত্রকার বর্গভট বৌদ্ধ ছিলেন । তিনি বলেছিলেন—“আমার গ্রন্থ হয়ত লোকে উপেক্ষা করবে। কারণ আমি চরক বা স্বশ্রতের ন্যায় ঋষি নই। কিন্তু ঔষধের যদি গুণ থাকে তাতে রোগ যাবেই— তা ব্রহ্মাই প্রয়োগ করুন বা আমিই করি।” এই ধরুন বিষ—ব্রাহ্মণ প্রয়োগ করুন বা ব্রাত্যক্ষত্রিয় প্রয়োগ করুন—তার ফল ভিন্ন হবে কি না আমি জিজ্ঞাসা করি । আমি বাড়ী গেলে চাষা-ভূষাদের নিয়ে থাকি। তারা বলে—“বাবু, আপনারা কি জাত জাত করেন ? এই মোটা ভেটেলের চাল, আমি রাধি আর আপনি রাধুন। একসঙ্গে মৈশিয়ে দিলে কি বলতে পারেন কোনটা কার ভাত ? দুইজনের একই রকম ভাত হয়।” অথচ আমরা বড় বড় বই থেকে জাতিভেদের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা দিই। হোটেলে সবাই একসঙ্গে খান, তাতে কারও বেশী উদর পীড়া হয় বলে জানি না। সবাই রেলগাড়ীতে চড়েন— সেখানে কি সকলে নৈকষ্য কুলীন ? মেথর দিব্য বাৰু হ’য়ে ট্রামগাড়ীতে যাচ্চে, আপনি তার পাশে বসেন ; ষ্টীমারে একদিন, ছ'দিন, তিনদিন চলেছেন—তাতেই থাকা, খাওয়া-দাওয়া ;—জাত বঁাচে কি ক’রে ? তখন জাত থাকে কোথায় ? ঢাকা অঞ্চলের একজন লোক কলিকাত৷ থেকে ফিরে গিয়ে বলেছিলেন—উইলসেন, ইষ্টেসেন, আর কেশবসেন,