পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬৪ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী আবার নরমই হোক আর গরমই হোক যা-কিছু আমার দেশকে যথার্থ উন্নতির পথে অগ্রসর ক’রে দেয় তাই আমি পরম পবিত্র বস্তু ব’লে জ্ঞান করি । ১৯০৬ সালের স্বদেশী আন্দোলনের প্রবল বন্যায় যারা ভেসেছিলেন, র্তাদের অনেকেই আবার ভাটার মুখে উন্টাপথে ভেসে যাচ্ছেন। যারা স্রোতের মুখে তৃণের মত, নূতনের প্রতিষ্ঠা করবার জন্য যাদের উৎকট পুরুষকার নেই, তাদের উদ্দীপনার অগ্নিশিখা শেষে গোলদীঘির ধারে বক্তৃতা ও ঠাকডাকের ধূমরাজিতে পরিণত হ’ল । ব্যবসানীতি ও অর্থশাস্ত্রের ক-খ-জ্ঞান নেই, তাই শুধু বক্তৃতার দ্বারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও অর্থসংস্থানের ব্যর্থ চেষ্টা আমাদের ভিতরে বাহিরে খুব একটা প্রবল ধাক্কা দিয়ে গেল। স্বদেশী আন্দোলনে বাঙলার শিল্প জাগল না—কিন্তু জাগ ল—বোম্বাই শিল্প। বোম্বাই প্রদেশে কাপড়ের কলকারখানা স্বদেশীর হাওয়ায় বেশ ঐসম্পন্ন হয়ে উঠল। বাঙলায় স্বদেশীশিল্পের যে পুনরুখান হয় না তার প্রধান কারণ বাঙালী উদ্যমহীন, অলস ও আরামপ্রিয়। আবেগপূর্ণ ভাবপ্রবণতা দ্বারা আমরা হকুমানের মত এক লাফে সাগর পার হতে চাই । কিন্তু ভাবোচ্ছাসের পশ্চাতে বিপুল কর্ম্মচেষ্টা না থাকায় আমাদের কেবল ভরাডুবি হতে হয়। আবার ভিতরের এই সাংঘাতিক বাধা-সকলকে আমরা কথার চটকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করি । নীরব সাধনা ভিন্ন যে কোন কাজ সম্পন্ন হওয়া একেবারে অসম্ভব—এই খাটি কথাটি সত্যভারে স্বীকার করতে আমরা কুষ্ঠিত হই । কিন্তু অকুষ্ঠিত চিত্তে কেবল গলাবাজীর দাপটে আমরা দু'বেল দেশোদ্ধার ক’রে থাকি ; বোম্বাই ও কলকাতার মধ্যে তফাৎ। অনেক। বোম্বাই সহরে মালাবার পাহাড়ের রমণীয় সৌন্দর্ঘ্যের মধ্যে এবং সমুদ্রসৈকতে যে