পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধনা ও সিদ্ধি 이 ( হয়েছে। আবার পশুতত্ত্ববিং যুরোপীয়ান সিংহ বন্য হস্তি প্রভৃতি শ্বাপদসঙ্কল আফ্রিকার জঙ্গলে খাচার মধ্যে বাস করে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিচ্ছেন—উদ্দেশু গরিলা সিম্পাঞ্জী প্রভৃতি বনমাহুষের অভ্যাস ও আচরণ জানবেন । তাদের ত ভাষা নেই, তাই সঙ্কেতে তাদের ভাববিনিময় লক্ষ্য করবেন। এমনি অসাধারণ অধ্যবসায় সহকারেই তারা সত্যের আবিষ্কার করেন । 響 জ্যোতির্ব্বিদ্যায় টাইকো ব্রেহী, কেপলার, গ্যালিলিও, নিউটন, হাশেলের সম্পর্ক কত নিবিড়, কত গভীর। এতগভীরতা শোণিতসম্পর্কে কোথায় পাবে! গ্যালিলিও কেপ্‌লার সমসাময়িক ছিলেন। কেপলারের অভাবে নিউটনের মাধ্যাকর্ষণের নিয়মাবলীর আবিষ্কারের পথ সুগম হত না। কত বিনিদ্র রজনীতে উদার উন্মুক্ত অসীম তাকাশের দিকুে কি আনন্দে কি আশায় ঐর চেয়ে থাকতেন ! কি অমূল্য রত্ন এরা পৃথিবীর জ্ঞান-ভাণ্ডারে দিয়ে গেছেন। এদের জ্ঞান-সাধনার মূলে গভীর অভিনিবেশ ! একেবারে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হয়ে এরা সাধ্য বস্তুর সন্ধান করেছিলেন, তাই সিদ্ধিলাভ ঘটেছিল। জ্ঞানান্বেষণে নিউটন এমনই তন্ময় হয়ে যেতেন যে আপন আহারের কথাই বিস্তৃত হতেন। একদিন নিউটন গভীর চিন্তায় মগ্ন। ভৃত্য আহার্য্যদ্রব্য সম্মুখে রেখে গেল। তার বন্ধু কৌতুক ক’রে সেইগুলি খেয়ে নিয়ে হাড়গুলি ঢাকা দিয়ে রাখলেন । ধ্যানভঙ্গের পর আহার করতে গিয়ে নিউটন দেখলেন হাড়গুলি পড়ে আছে। অতএব পণ্ডিতবর সিদ্ধান্ত করলেন তার আহার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অত মনে নেই ; তাই পাছে কেউ ঠাট্ট করে এই আশঙ্কায় চারিদিক চেয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন। কি আপন ভোল ভাব ! এরূপ তন্ময়ত্বের আরও কয়েকটি নিদর্শন দেখাই ।