পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৮ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী একই। জনকোলাহলের বাহিরে পর্বতে জঙ্গলে, গুহার মধ্যে জীবনের কিয়দংশ সাধনা ক’রে এর ভগবানের সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন । অরণ্যে লোকচক্ষুর অন্তরালে বৃহদারণ্যক উপনিষদ গ্রথিত হয়েছে । আবার বুদ্ধদেবেরও অপর নাম এইজন্য “সিদ্ধার্থ” ; আমরা অতীতের গর্ব্ব করে থাকি, কিন্তু অতীতের প্রাণের লক্ষণগুলিকে আপন জীবনে ফুটিয়ে তুলতে চাই না ;—অতীতের সিদ্ধির উপর আমাদের লোভচুকু ষোল আনা আছে, কিন্তু তার জীবনব্যাপী কঠোর সাধনার কথা শুনেই আমরা আতঙ্কে মরে যাই । রবীন্দ্রনাথের কবিপ্রতিভা আজ শতদলপদ্মের মত বিকশিত হয়েছে । কিন্তু একটির পর একটি করে’ এই শতদল ফুটেছে,–এর পিছনে আছে একনিষ্ঠ সাধন । গোখলে ইস্কুলমাষ্টার ছিলেন, শ্রীনিবাস শাস্ত্রীও ছিলেন । পরাঞ্জপেও তাই । ৭৫২ টাকা মাহিনায় গোখলে ফার্গুসন কলেজে শিক্ষকতা করেছেন । কিন্তু গোখলে আজ দেশপূজ্য, তার কারণ তিনি দেশসেবার সাধনা করেছিলেন । এই দারিদ্র্যব্রতধারীর বজেট-বক্তৃতায় ব্যবস্থাপক সভায় লাট কর্জন কাপতেন। আর এক প্রাতঃস্মরণীয়ের কথা বলে আমার কথা শেষ করি ;–তিনিও দারিদ্র্যব্রতধারী, মহাসাধক মহাত্মা গন্ধী । গন্ধী আজ বিশ্ববিশ্রুত । কিন্তু একদিনেই কি তার নাম সারা বিশ্বের বিস্ময় উৎপাদন করেছে ? ২১ বৎসর পূর্ব্বে আলবার্ট হলে দক্ষিণআফ্রিকা-প্রবাসী ভারতবাসীদের দুর্দশ দেশবাসীর নিকট বিবৃত করতে আমিই প্রথম তাকে আহবান করি । স্বর্গগত নরেন্দ্রনাথ সেন সেই সভায় সভাপতি ছিলেন। মহাত্মা গন্ধীর বক্তৃতার বিষয় ছিল—কেপ কলোনিতে ( Cape Colony) ভারতবাসীর অশেষ দুর্দশার কথা । মহাত্মা তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতবাসীদের নেতা । তিনি দেশবাসীরা হিতের জন্য আপনাকে একবারে নিঃশেষ করে’ উৎসর্গ করে দিয়ে