পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬• আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী এইরূপ আরও অনেক দৃষ্টান্ত হইতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে প্রতিভাশালী ব্যক্তি শিক্ষকবৃত্তি অবলম্বন করিয়াও দেশপ্রসিদ্ধ হইতে পারেন, যদি তিনি নিজের প্রতিভার উপযুক্ত কার্ধ্যে আপনার সমস্ত শক্তি অক্লাস্তভাবে নিয়োগ করিতে পারেন। উপসংহারে আমার বলিবার কথা এই যে, প্রত্যেক জেলাতেই উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় বালকদিগের শিক্ষাকার্য্যে সহায়তা করিতেছে। প্রত্যেক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্নভাবে আপন আপন কার্য্য করিতেছেন। বৎসরান্তে একবার তাহার একস্থানে মিলিত হইয়া পরস্পর অপেন আপন অভিজ্ঞতার বিষয় আলোচনা কিম্বা শিক্ষাসংক্রাস্ত কোন জটিল প্রশ্নের মীমাংসা করিবার চেষ্টা অথবা স্ব স্ব স্বাধীন চিস্তার আদান প্রদান করিয়া উৎসাহিত হউন। পরিশেষে, আমার দেশবাসী যে যেথায় আছেন, আজ আমি সকলের নিকট যুক্তকরে প্রার্থনা করিতেছি, আমাদের মাতৃভূমির অজ্ঞানান্ধকার দূর করিয়া পুনরায় তাহাকে প্রাচীন কালের মত জগদ্বরেণ্যা করিবার জন্য প্রত্যেকে অকাতরে নিজ নিজ শক্তি প্রয়োগ করুন। ধনবান, আপনি ধনের কোষ উন্মুক্ত করুন ; বিদ্বান, আপনি অর্থলোভ ত্যাগ করিয়া শিক্ষকতা বৃত্তি অবলম্বন করুন। আর আমার যে, সকল দেশভ্রাতা ধনসম্পদ বা বিস্তাসম্পদ লাভে সৌভাগ্যবান হন নাই, তাহারা প্রত্যক্ষভাবে না পারেন, পরোক্ষ ভাবে এই মহৎ কার্য্যের সহায়তা করুন— সকল মিলিয়া শিক্ষককে তাহার পদোচিত মর্যাদা দান করিতে থাকুন। তাহা হইলেই যোগ্য শিক্ষকের হাতে আমাদের ছেলেরা মানুষ হইয়া উঠিবে—আমাদের সকল দুঃখ-দুর হইবে।