পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যয়ন ও জ্ঞানলাভ ২৭৯ পাচ ছয় ঘণ্টা কঠিন পরিশ্রম ক’রে কাজ করে, কিন্তু যেমনি কাজ শেষ হয় অমনি গঙ্গার ধারে-খোলা মাঠে মুক্ত বাতাসে বেড়াতে যায় । তুরা সে সময়ে বসে থাকে না–কুড়েমি করে না, আড্ডা বা মজলিসে জমে না । কিন্তু আমরা স্বাস্থ্য রাখতে জানি না, সময়ে কাজ করি না, স্কাই শরীর ও সময় দুইএরই অপব্যবহার হয় ; স্বাস্থ্যও থাকে না, কাজও ওঠে না । এদেশে শুধু বই পড়িয়ে বিদ্যা শেখানো হয়। কিন্তু ইউরোপে সাধারণ, পুস্তক পাঠের সঙ্গে প্রকৃতির উন্মুক্ত বিশাল গ্রন্থ পাঠ ক’রে .জ্ঞানার্জন করবার প্রবৃত্তি জাগিয়ে দেওয়া হয়। শুধু বই পড়ে, কত শেখা যায় ? নিজের চেষ্টায় বিশ্বরাজ্যের নানাপ্রকার অদ্ভূত ঘটনা নিপুণচক্ষে পর্য্যবেক্ষণ করতে হয়; তবেই প্রকৃত জ্ঞানুার্জন হয়। পুথিগত বিষ্কার দৌড় কখনই বেশী হয় না। বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ডিকেন্স সময়ে সময়ে ছদ্মবেশে মদের দোকানে গিয়ে বসে থাকৃতেন । উদ্দেশু মাতালের কথাবার্ত্তা শুনে তার প্রকৃতি বুঝে দেখা । এই ভাবে নানা রকমে বিখ্যাত ইউরোপীয়ের মানবপ্রকৃতি নিখুঁত করে জানবার চেষ্টা করেন । এ-ই প্রকৃত অধ্যয়ন । মানবপ্রকৃতির পর জড়প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের দ্বারা তাও বুঝতে হবে। লওনের কাছে এক বটানিকেল গার্ডেন আছে, তার নাম কিউ গার্ডেনস (Kew Gardens), পৃথিবীতে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ। উদ্ভিদবিদ্যা আহরণ করবার জন্যে শত সহস্র বিদ্যার্থ সেখানে যান। নানা রকমের গাছ, তাদের উৎপত্তি ও বৃদ্ধির নিয়ম—নিজের চক্ষে স্থকৌশলে পর্য্যবেক্ষণ ক’রে উদ্ভিদ সম্বন্ধে তারা অনেক তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন। আর আমাদের এই স্বজল,স্বফল দেশে, এই ভারতবর্ষে গাছের ত অভাব নেই। কিন্তু উদ্ভিদ সম্বন্ধে কি তত্ত্ব জানতে পেরেছি আমরা ?